সোমবার যে জোট সরকারের পতন হয়েছে সেই সরকারের এমপি’দেরই সমর্থন পেয়েছেন ইসমাইল। ২২২ আসনের পার্লামেন্টে তিনি পেয়েছেন ১১৪ আইনপ্রণেতার সমর্থন। মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম এবং আইনপ্রণেতারা বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার সরকারে টিকে থাকার জন্য মিত্রদের সমর্থন না পাওয়ায় পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী মুহিইদ্দিন ইয়াসিন। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মাত্র ১৭ মাস ক্ষমতায় থেকে পদ ছাড়তে হয় তাকে।
এতে দেশের রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। ১৭ মাসের নড়বড়ে সরকার নিয়েই কোভিড সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি আর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় লড়তে হচ্ছিল মুহিইদ্দিনকে। তারপরও আস্থা ভোটে টিকে থাকার সবরকম চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত শুক্রবার মুহিউদ্দিন ইয়াসিন প্রথমবারের মত স্বীকার করে নেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার সমর্থন তার পক্ষে নেই।
এখন তার জায়গায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ইসমাইল সাবরির নিয়োগ নিশ্চিত হলে তিন বছর পর আবারও মালয়েশিয়ার শাসন ক্ষমতায় আসবে ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) পার্টি।
ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ বিশেষ করে, ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ (ওয়ানএমডিবি) বিনিয়োগ তহবিলের মতো কোটি কোটি ডলারের কেলেঙ্কারির জেরে তিন বছর আগে সাধারণ নির্বাচনে হেরে গিয়েছিল দলটি।
তার আগ পর্যন্ত ৬০ বছর ধরে মালয়েশিয়ার শাসন ক্ষমতায় ছিল ইউএমএনও পার্টি। মুহিইদ্দিনের জোট সরকারেরও অংশ ছিল তারা। তিন বছর আগের ওই নির্বাচনের পর মালয়েশিয়ায় এ পর্যন্ত দুটি সরকার এসেছে। কিন্তু দুই সরকারই নড়বড়ে এবং ক্ষণস্থায়ী হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে যে কোনও নতুন প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টের আস্থা ভোটের মুখোমুখি করতে চান মালয়েশিয়ার সাংবিধানিক রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহ। কারণ, এতে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রয়েছে কীনা তা পরখ করা সম্ভব হয়।
ইসমাইল সাবরিকে যে আইনপ্রণেতারা সমর্থন দিয়েছেন তা যাচাই করে দেখতে বৃহস্পতিবার তাদেরকে সাক্ষাত করতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজা আব্দুল্লাহ। ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অরগানাইজেশনের (ইউএমএনও) এক আইনপ্রণেতা আহমেদ মাসলান এদিন এক টুইটে একথা জানান।
তিনি বলেন, সাবরিকে সমর্থন দেওয়া আইনপ্রণেতাদের মধ্যে মুহিইদ্দিনের জোটে থাকা একই রাজনৈতিক দলের আইনপ্রণেতারাও আছেন। তবে বিরোধী দল, যারা মূলত আনোয়ার ইব্রাহিমকে সমর্থন করেন তাদেরকে রাজ প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বিরোধী আইনপ্রণেতা ওং কিয়ান মিং এক টুইটে একথা জানিয়েছেন।
শুক্রবার ঊর্ধ্বতন অন্যান্য মালয় শাসকদের সঙ্গে সাক্ষাত করার কথা রয়েছে রাজার। তারপরই নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে।