দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হেলমান্দে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেনারেল সাদাত। সেখানে প্রাদেশিক রাজধানী লস্কর গা-তে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে।
জাতিসংঘের হিসাবে, গত একদিনের লড়াইয়ে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে। তালেবান নগরীর বেশিরভাগই দখল করে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
তবে লড়াই এখনও চলছে এবং সরকারি বাহিনী লস্কর গা জঙ্গিদের হাতে চলে যেতে না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
জেনারেল সাদাত বিবিসি-কে বলেছেন, সরকারি বাহিনী পরাজয়ের সম্মুখীন হলেও তালেবান যোদ্ধারা হামলা চালিয়ে টিকে থাকতে সক্ষম হবে না বলেই মনে করেন তিনি।
তবে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, অন্যান্য ইসলামি গোষ্ঠীর সদস্যরা তালেবানের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাদের শক্তি বাড়াচ্ছে। এর ফলে যুদ্ধে তালেবানের জয় হলে তা আফগানিস্তান ছাড়াও অন্য দেশগুলোর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
সাদাত বলেন, “তালেবানের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ফলে ছোট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর আশা বেড়ে গিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে তাদের কার্যক্রম বাড়বে। এতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হবে।”
আফগানিস্তানে তালেবান ও সরকারি বাহিনীর লড়াইকে ‘স্বাধীনতা এবং সর্বগ্রাসবাদীদের মধ্যকার যুদ্ধ’ বলে উল্লেখ করেছেন জেনারেল সাদাত।
আফগানিস্তানজুড়ে বড় ধরনের আক্রমণাত্মক অভিযানের অংশ হিসাবে হেলমান্দ প্রদেশেও হামলে পড়েছে তালেবান।
আফগানিস্তানে দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো জোট সেনা প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই দেশটিতে সংঘাত বেড়েছে। আফগান বাহিনীর হাত থেকে একের পর এক অঞ্চল দখল করে নিচ্ছে তালেবান।
হেলমান্দ ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক অভিযানের কেন্দ্রস্থল। এই প্রদেশের লড়াইয়ে তালেবান জয়ী হলে তা হবে আফগান সরকারের জন্য এক বড় ধাক্কা। লস্কর গা’য়ের পতন হলে ২০১৬ সালের পর এটিই হবে তালেবানের প্রথম কোনও প্রাদেশিক রাজধানী জয়।
লস্কর গা ছাড়াও বর্তমানে আরও দুটি প্রাদেশিক রাজধানীতে তালেবান হামলা চালাচ্ছে। আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী কান্দাহার দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তালেবান। রোববার কান্দাহারের বিমানবন্দরে রকেট হামলা হয়েছে।
কান্দাহার দখলে নিতে পারলে তা হবে তালেবানের জন্য এক বিরাট জয়। কারণ, এতে করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে আসবে। আর তৃতীয় নগরীটি হচ্ছে পশ্চিমের হেরাত। সেখানে আফগান বাহিনীর কমান্ডোদের সঙ্গে তালেবানের লড়াই চলছে।