ওমান উপকূলে ট্যাংকারে হামলা নিয়ে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা বাড়ছে

ওমান উপকূলে ট্যাংকারে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2021, 04:12 PM
Updated : 1 August 2021, 04:32 PM

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তিনি নিশ্চিত যে এ ঘটনায় ইরান জড়িত। ওদিকে, ইরান এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামলার শিকার হওয়া ইসরায়েলি ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন এমভি মার্সার স্ট্রিট নামের ট্যাংকারটির দুই ক্রু নিহত হয়েছেন। এদের একজন যুক্তরাজ্যের নাগরিক, অন্যজন রোমানিয়ার।

বিবিসি জানায়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “ইরানকে কিভাবে বার্তা পাঠাতে হয় তা আমরা জানি।” পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান বলেছে, তারা “নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে কোনও দ্বিধা করবে না।”

ইসরায়েল এবং ইরান পরিচালিত জাহাজগুলোতে সম্প্রতি কয়েকবার হামলা হয়েছে। মার্চ থেকে সংঘটিত এইসব হামলাকে মূলত পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা হিসাবেই দেখা হচ্ছে।

বিবিসি’র নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার বলছেন, অঘোষিত এই ছায়া যুদ্ধ এবং হামলার ঘটনার পাল্টা অস্বীকারে দুই দেশের উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। তার মধ্যে মার্সার স্ট্রিটে হামলায় প্রাণহানি উত্তেজনার এই আগুনে ঘি ঢেলেছে।

ওই হামলার পরপরই শুক্রবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ এর জন্য ‘ইরানের সন্ত্রাসকে’ দায়ী করেছেন। ইরান তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনও জবাব দেয়নি।

তবে রোবববার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিবজাদেহ সাংবাদিকদের বলেছেন, “ইসরায়েলের এইসমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা বন্ধ করতে হবে।” এইসব অভিযোগ করে ইসরায়েল সত্য থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরাতে চাইছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, তারা (ইরান) দায় এড়াতে চাইছে। হামলা ঘটনা অস্বীকার করাটা ‘কাপুরুষোচিত’ বলে তিনি নিন্দা করেন।

রোববার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেনেট বলেন, ইরান যে ওই হামলা চালিয়েছে তার গোয়েন্দা প্রমাণ আছে। ইরান ‘মারাত্মক ভুল’ করেছে সেটি পরিষ্কার করে তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান তিনি।

ইসরায়েলের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবও ট্যাংকারে হামলার ঘটনার জন্য ইরানকে দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের ধারণা হামলাটি ইচ্ছাকৃত, নিশানা করে তা করা হয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনেরও লঙ্ঘন।”

ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় তারা ‘বেশ উদ্বিগ্ন’। ঘটনার ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে জানায় তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, হামলাটি ড্রোন দিয়ে চালানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। তবে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা জানার চেষ্টা চলছে।

তানজানিয়ার দার আস সালাম থেকে ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ট্যাংকারটি হামলার মুখে পড়ে। ঘটনার সময় জাহাজটিতে কোনো কার্গো ছিল না বলে জানিয়েছে জোডিয়াক মেরিটাইম কোম্পানি।