লিয়াজোঁ কার্যালয়, মুন-কিম শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে ‘আলোচনা চলছে’

দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের বরফ গলাতে ফের একটি যৌথ লিয়াজোঁ কার্যালয় চালু এবং কিম জং উন ও মুন জায়ে-ইন শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে আলোচনা চলছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2021, 09:42 AM
Updated : 28 July 2021, 10:01 AM

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনটি সূত্র এ খবর দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এক বছর পর চলতি সপ্তাহে দেশদুটির মধ্যে হটলাইন সংযোগ পুনরায় চালু হয়েছে। এর পরপরই লিয়াজোঁ কার্যালয় খোলা ও শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে দুই পক্ষের আলোচনার কথা জানা গেল।

এ বছরের এপ্রিল মাস থেকেই উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম ও দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুনের মধ্যে কয়েকদফা চিঠি চালাচালি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন দক্ষিণের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা।

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ‘সংবেদনশীলতার’ কারণে তারা তাদের পরিচয় প্রকাশে রাজি হননি।

উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে আলোচনা পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ভেস্তে যাওয়া আলোচনা পুনরায় শুরুর সম্ভাবনাও সৃষ্টি করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করার বিনিময়ে তাদের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে দুটি শীর্ষ সম্মেলন হয়েছিল।

হ্যানয়ে দ্বিতীয় সম্মেলন কোনো চুক্তি ছাড়াই ভেস্তে যাওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া আলোচনা বন্ধ আছে।

পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সিউলের সম্পর্ক উন্নয়নের ইস্যু মুনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্টের মেয়াদের শেষ বছরে তার জনপ্রিয়তা আগের তুলনায় অনেক কম দেখা যাচ্ছে। দুই কোরিয়ার মধ্যে ফের আলোচনা এ চিত্র বদলাতে সহায়তা করতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের দুটি সূত্র জানিয়েছে, পানমুনজমে একটি যৌথ লিয়াজোঁ কার্যালয় স্থাপন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।

উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত শহর কায়েসংয়ে আগের লিয়াজোঁ কার্যালয়টি পিয়ংইয়ং ২০২০ সালে গুড়িয়ে দিয়েছিল।

দুই পক্ষ কিম ও মুনের মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের সম্ভাব্যতাও খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণের কর্মকর্তারা।

“আলোচনা এখনও চলছে। কোভিড-১৯ একটি বড় সমস্যা। মুখোমুখি বৈঠকই সবচেয়ে ভালো, আশা করছি পরিস্থিতির উন্নতি হবে,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন এক কর্মকর্তা।

উত্তর কোরিয়া এখন পর্যন্ত দেশটিতে কোনো কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেনি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে তারা সীমান্ত বন্ধ রেখেছে, দেশের ভেতরেও দিয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ।

দুই দেশের মধ্যে লিয়াজোঁ কার্যালয় চালু এবং মুন-কিম বৈঠক নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মন্তব্য চাওয়া হলেও তারা প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারির ব্রিফিং থেকে তথ্য নিতে বলে। 

মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি পার্ক সু-হিউন তার ব্রিফিংয়ে জানান,দুই দেশের মধ্যে লিয়াজোঁ কার্যালয় চালুর ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।

উত্তর আর দক্ষিণের দুই শীর্ষ নেতা সম্মেলনের পরিকল্পনা উড়িয়ে দেননি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দক্ষিণের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া যদি কোভিড-১৯ এর কারণে মুখোমুখি বৈঠকে আপত্তি জানায়, সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে দুই নেতার মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকের পরিকল্পনাও তাদের মাথায় আছে।

দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হলে তা অনেক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবেও মন্তব্য করেছেন তিনি।