বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্রে বন্যা, ভূমিধসে মৃত বেড়ে ১১২

টানা বৃষ্টিতে ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১১২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

>>রয়টার্স
Published : 23 July 2021, 10:08 AM
Updated : 23 July 2021, 05:45 PM

বৃহস্পতিবার মুম্বাই থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের রায়গড়ে অন্তত তিনটি স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।

রাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মুম্বাই থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের তালিয়ে গ্রামে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাছাড়া, মহারাষ্ট্রের অন্যান্য আরও এলাকায় ৯ টি ভূমিধসের ঘটনায় মারা গেছেন ৫৯ জন এবং ভারি বৃষ্টিপাতে দুর্ঘটনায় আরও ১৫ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সাতারা এবং রায়গড় জেলায় ভূমিধসে আরও কয়েক ডজন মানুষ চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে, বলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য কর্মকর্তা।

ভারতে পশ্চিম উপকূলে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে উপচে পড়ার আশঙ্কায় বাঁধগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত ৪০ বছরের ইতিহাসে মহারাষ্ট্রে জুলাই মাসে এবারের মত এত বৃষ্টি আর কখনও হয়নি।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে সাংবাদিকদের বলেছেন, অপ্রত্যাশিত ভারি বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় ভূমিধস হয়েছে এবং নদীগুলোর আশপাশের এলাকা তলিয়ে গেছে।

“বাঁধ এবং নদী উপচে পড়ছে। আমরা বাধ্য হয়ে বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দিয়েছি এবং নদী তীরের মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছি।”

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে গত কয়েকদিন ধরেই ভারি বর্ষণ হচ্ছে। গত সপ্তাহে মুম্বাইয়ের কয়েকটি এলাকায় প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ভূমিধসে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়।

রাজ্যে বন্যা ও ভূমিধসে আটকা পড়া হাজারো মানুষকে উদ্ধারে সরকার হেলিকপ্টার কাজে লাগাচ্ছে। আটকা পড়াদের বাড়ির ছাদ বা কাছাকাছি উঁচু কোথাও আশ্রয় নিতে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে তাদের হেলিকপ্টার থেকে সহজে দেখা যায়।

আনন্দবাজার জানিয়েছে, টানা বৃষ্টিতে মুম্বাই-গোয়া জাতীয় মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৃহস্পতিবারই জরুরি বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে।

মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় আগামী কয়েকদিনও ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে পূর্বাভাস দিয়ে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ।

ভারতে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যটিকে এখন বৃষ্টি, বন্যা, ভূমিধসের এ দুর্যোগও সামাল দিতে হচ্ছে।

তবে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের মধ্যেও কোভিডে আক্রান্ত এবং অন্য অসুস্থদের চিকিৎসায় যেন কোনও ধরনের বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।