টেলিভিশন চ্যানেল ভারত সমাচার ও হিন্দি ভাষার পত্রিকা দৈনিক ভাস্করের একাধিক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এ অভিযান পরিচালিত হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
কর্মকর্তারা বলছেন, কর ফাঁকির অভিযোগ তদন্তে এ অভিযান চালিয়েছেন তারা।
কার্যালয়ের পাশাপাশি গণমাধ্যম দুটির একাধিক কর্মকর্তার বাড়িতেও তল্লাশি হয়েছে, অনেকের ফোনও জব্দ হয়েছে।
বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা এ অভিযানকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর ‘উদ্দেশ্যমূলক আঘাত’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। গণমাধ্যমের অধিকার নিয়ে কাজ করা অনেক সংগঠনও এ অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে।
তবে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কর কর্মকর্তাদের অভিযানের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন।
“সংস্থাগুলো তাদের মতো করে কাজ করে, আমরা সেখানে হস্তক্ষেপ করি না,” বলেছেন তিনি।
ভারতে সর্বাধিক পঠিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে দৈনিক ভাস্কর অন্যতম। এই সংবাদপত্র এবং ভারত সমাচার টিভি মহমারী মোকাবেলায় অক্সিজেন ও হাসাপাতালে শয্যার ঘাটতি, গঙ্গা নদীতে লাশ ভেসে আসাসহ সরকারের অব্যবস্থাপনা নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এপ্রিলে দৈনিক ভাস্কর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গুজরাট শাখার প্রেসিডেন্ট জিতু ভাগানির ফোন নম্বরও ছেপে দিয়েছিল। সম্প্রতি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে বেশ ক’জন ভারতীয় সাংবাদিকের ওপর নজরদারি নিয়েও প্রতিবেদন প্রকাশ করছিল তারা।
এসব প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়াতেই সরকার তাদের ‘টার্গেট’ করেছে বলে অভিযোগ দৈনিক ভাস্কর ও ভারত সমাচারের।
“আমাদের প্রতিবেদনের ফলাফল এই অভিযান। অন্য অনেক গণমাধ্যমের মতো আমরা চেপে যাইনি, আমরা অক্সিজেন ও হাসপাতাল শয্যার ঘাটতির কারণে মানুষের মৃত্যুর খবর ছেপেছি,” ওয়াশিংটন পোস্টকে এমনটাই বলেছেন দৈনিক ভাস্করের ন্যাশনাল এডিটর ওম গৌর।
“যত আমাদের গলা চেপে ধরবেন, তত জোরে আমরা সত্য বলবো,” টুইটারে বলেছে ভারত সমাচার।
২০১৭ সালে ভারতের কর কর্তৃপক্ষ সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি কার্যালয় এবং এর প্রতিষ্ঠাতাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সংক্রান্ত তাদের সাম্প্রতিক র্যাংকিংয়ে ভারতকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪২ নম্বরে স্থান দিয়েছে।
মেক্সিকো ও মিয়ানমার এ তালিকায় ভারতের কাছাকাছিই অবস্থান করছে।