ভারতের কেরালায় জিকা ভাইরাস সংক্রমণ, সতর্কতা জারি

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারীর তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মাঝেই এবার কেরালায় হানা দিয়েছে জিকা ভাইরাস। সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য সরকার। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2021, 10:53 AM
Updated : 9 July 2021, 11:23 AM

বিবিসি জানায়, ১৪ জনের ক্ষেত্রে মশাবাহিত এই জিকা ভাইরাস সংক্রমণের খবর আসার পর রাজ্যজুড়ে সব জেলায় সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে।

ত্রিভেনড্রাম (বর্তমানে তিরুবন্তপুরম) জেলায় জিকা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ। আক্রান্তদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যকর্মী।

এক বিবৃতিতে বীনা জর্জ জানান, ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয় ২৪ বছর বয়সী এক গর্ভবতী নারীর দেহে। তিনি কাছের তামিলনাড়ু রাজ্যর সীমান্তবর্তী একটি শহরের বাসিন্দা।

গত ২৮ জুনে ওই নারী জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীরে র‌্যাশ নিয়ে কেরালার রাজধানী শহর ত্রিভেনড্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। ৭ জুলাই বুধবার একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। 

তবে তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল। বাচ্চার জন্মও স্বাভাবিকভাবেই হয়েছে, এমনকী রাজ্যের বাইরে ভ্রমণের ইতিহাসও এই নারীর নেই।

মৌসুমি বৃষ্টির ফলে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের স্থানগুলোতে এই ভাইরাসবাহিত মশা বেড়ে যাচ্ছে বলে শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ।

কেরালার স্বাস্থ্য সচিব ড. রাজন খোবরগাদে বলেন, রোগটি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা এবং নিবিড় নজরদারির জন্য রাজ্য সরকার জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অঞ্চলে দল পাঠিয়েছে।

ভারতে এর আগে ২০১৬-১৭ সালে পশ্চিমাঞ্চলীয় গুজরাট রাজ্যে জিকার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গিয়েছিল। জিকা ভাইরাসের চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত তেমন কোনও ওষুধ কিংবা টিকা নেই।

১৯৪৭ সালে উগান্ডার জিকা জঙ্গলে প্রথম এই ভাইরাস পাওয়া যায়। বানরের কাছ থেকে মানুষের দেহে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৫২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে পৃথক একটি ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

১৯৫৩ সালের এক প্রতিবেদনে, ভারতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন গবেষকরা। এরপর ২০১৬-১৭ সালে গুজরাটের আহমেদাবাদ শহর থেকে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর আসে।

সাধারণত এডিস ইজিপ্টি মশার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে থাকে। তবে এটি যৌন সংক্রমণের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। জিকা ভাইরাস ক্ষতি করতে পারে গর্ভস্থ সন্তানের। ভ্রুণের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এই ভাইরাস।

গর্ভবতী নারীরা জিকা আক্রান্ত হলে শিশু বিকলাঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং শিশুর মস্তিষ্ক স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট আকারের হতে পারে। বিকাশজনিত সমস্যা দেখা দেওয়া ছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।