গৃহকর্মী হত্যা, সিঙ্গাপুরে গৃহকর্ত্রীর ৩০ বছরের কারাদণ্ড

মিয়ানমারের এক গৃহকর্মীকে অনাহারে রেখে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত সিঙ্গাপুরের এক নারীকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2021, 01:19 PM
Updated : 22 June 2021, 01:19 PM

বিবিসি জানায়, মারা যাওয়া ওই গৃহকর্মীর নাম পিয়াং নাইহ ডন (২৪)। শরীরে ক্ষত এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে ২০১৬ সালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তার ওজন ছিল মাত্র ২৪ কেজি।

দোষীসাব্যস্ত গৃহকর্ত্রীর নাম গায়িথ্রি মুরুগায়েন। তার স্বামী একজন পুলিশ কর্মকর্তা। অসহায় গৃহকর্মীকে গায়িথ্রি যেভাবে হত্যা করেছেন তার বর্ণনায় কৌসুঁলিরা ওই নারীকে ‘শয়তান এবং চরম অমানবিক’ বলেছেন।

সিঙ্গাপুরে গত কয়েক বছরে গৃহকর্মী নির্যাতনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

এই ‍মামলার রায়ে বিচারক বলেন, কিভাবে ২৪ বছরের একজন নারীকে নির্যাতন, অপমান এবং অনাহারে রেখে শেষ পর্যন্ত তাকে হত্যা করা হয়েছে তার চিত্র কৌসুঁলিরা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‍‘‘এটা সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে নিন্দনীয় হত্যাকাণ্ডের একটি। ওই গৃহকর্মী মারা যাওয়ার আগে একমাস ধরে যে মাত্রার নির্যাতন সহ্য করেছেন তার সঠিক বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।”

কৌসুঁলিরা আদালতে জানান, ২০১৫ সালের অক্টোবরে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে মিয়ানমার থেকে সিঙ্গাপুরে যান পিয়াং নাইহ ডন। সেটিই ছিল বিদেশের মাটিতে তার প্রথম কাজ। শুরু থেকেই গৃহকর্ত্রী গায়িথ্রি তাকে নির্যাতন করতেন।

বাড়িতে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, পিয়াং তার জীবনের শেষ এক মাসে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন। প্রায়ই তাকে দিনে কয়েকবার মারধর করা হত। গৃহকর্ত্রী তাকে ইস্ত্রি গরম করে ছেঁকা দেন, কখনও তুলে আছাড় মারেন। তাকে খাবারও ঠিকমত দেওয়া হত না। ফলে ১৪ মাসে পিয়াংয়ের ওজন ১৫ কেজি কমে যায়।

পিয়াং ২০১৬ সালের জুলাই মাসে মারা যান। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবের কথা বলা হয়। ক্রমাগত তার শ্বাসরোধ করার কারণে এমনটা হয়েছে। গায়িথ্রি মাও পিয়াংকে নির্যাতন করেছেন।

গায়িথ্রি বিষন্নতা এবং মনরোগে ভুগছেন দাবি করে তার আইনজীবী আদালতের কাছে তার শাস্তি কমিয়ে আট/নয় বছর করার আবেদন করেছিলেন। এই ঘটনার পর গায়িথ্রির স্বামী বরখাস্ত হন। গায়িথ্রির মায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়।

বর্তমানে আড়াই লাখের বেশি বিদেশি নারী সিঙ্গাপুরে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। তাদের বেশিরভাগই ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার বা ফিলিপিন্সের নাগরিক।