ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থি বিচারক ইব্রাহিম রাইসি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2021, 01:14 PM
Updated : 19 June 2021, 01:14 PM

শুক্রবারের নির্বাচনে পড়া দুই কোটি ৮৬ লাখ ভোটের মধ্যে শনিবার প্রায় ৯০ শতাংশ গণনার পর দেখা গেছে, রাইসি এক কোটি ৭৮ লাখ ভোট পেয়ে অন্যান্যদের চেয়ে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।

অন্য প্রার্থীদের পক্ষে এ ব্যবধান অতিক্রম করা সম্ভব হবে না বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জামাল ওরফি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

ওরফি আরও জানান, শুক্রবারের চার প্রার্থীর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাইসির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রেভোলুশনারি গার্ডের সাবেক কমান্ডার মোহসেন রেজায়ি ৩৩ লাখ ভোট পেয়েছেন আর ২৪ লাখ ভোট পেয়ে তার পরে আছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান আব্দোলনাসের হেম্মাতি। 

৬০ বছর বয়সী শিয়া আলেম রাইসি এ নির্বাচনে জিতবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির আর্শীবাদপুষ্ট প্রার্থী ছিলেন তিনি। দেশটির প্রভাবশালী রেভুলোশনারি গার্ডেরও রাইসির প্রতি সমর্থন ছিল। 

ইরানের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি রাইসির দপ্তরে গিয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ বলেছেন, তিনি ইরানকে ভালোভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেন।

“নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগ পর্যন্ত আগামী ৪৫ দিন আমরা নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের পাশে থাকবো ও তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করবো,” রুহানি এমনটি বলেছেন বলে তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম।

ইরানের সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের দুই মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই, তাই রুহানি এবার প্রার্থী হতে পারেননি।

নির্বাচনী প্রচার চলাকালে রাইসি বিস্তারিত কোনো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কর্মসূচী প্রস্তাব করেননি। কিন্তু ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্ব শক্তির চলা ২০১৫ পারমাণবিক চুক্তির পুনরুজ্জীবনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এই চুক্তি পুনরুজ্জীবিত হলে দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে পারে।

“নতুন সরকারের হয়ে মানুষের জীবন-জীবিকার সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো আমরা,” রাইসি এমনটি বলেছেন বলে তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম।

২০১৯ সালে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে রাইসিকে নিয়োগ দেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। 

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করা রাইসি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন। কয়েক দশক আগে রাজনৈতিক বন্দিদের হত্যার ঘটনায় তিনি জড়িত এমন সন্দেহে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে ওয়াশিংটন।

খামেনি প্রেসিডেন্ট না হলেও ইরানের পররাষ্ট্র থেকে শুরু করে পারমাণবিক নীতি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সব ইস্যুতে তার কথাই শেষ কথা।