টিকার মামলায় হেরেছে ইইউ, বলছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা

কোভিড- ১৯ টিকার সরবরাহ চুক্তি নিয়ে করা মামলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন হেরে গেছে বলে দাবি করেছে অ্যাংলো-সুইডিশ ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2021, 06:17 PM
Updated : 18 June 2021, 06:17 PM

তাদের বিবৃতির বরাতে রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুনের মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে আরও টিকা সরবরাহের আদেশ দিতে ওই মামলা করেছিল ইইউ। ব্রাসেলসের আদালত তাতে সাড়া দেয়নি।

তবে ইউরোপীয় কমিশন ওই দাবি নাকচ করে বলেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা যে চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে, আদালত সে বিষয়ে একমত হয়েছে।

কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লিয়েন বলেন, “আদালতের ওই সিদ্ধান্ত কমিশনের অবস্থানকেই সমর্থন করে: অ্যাস্ট্রাজেনেকা চুক্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি।”

জুনের শেষ নাগাদ ৩০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করতে ‘সর্বোচ্চ চেষ্টার’ কথা উল্লেখ করে ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কিন্তু উৎপাদন সঙ্কটের কারণে এই লক্ষ্য ১০ কোটি ডোজে নামিয়ে আনে প্রতিষ্ঠানটি।

সরবরাহ প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়ায় এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের টিকা কর্মসূচিতে দেরি হয়। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে টিকার এই বিপুল পরিমাণ সরবরাহ পাওয়া যাবে বলে ধরে নিয়েছিল ই্‌ইউ।

এ নিয়ে তিক্ততার এক পর্যায়ে জুনের শেষ নাগাদ কমপক্ষে ১২ কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার জন্য ব্রাসেলসের একটি আদালতে মামলা করে ইইউ। 

কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকার ৮ কোটি ২০ লাখ ডোজ সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। জুনের শেষেই এই টিকা সরবরাহ করা যাবে বলেও দাবি করেছে কোম্পানিটি।

আদালত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে ১ কোটি ৫০ লাখ ডোজ, ২৩ অগাস্টের মধ্যে ২ কোটি ডোজ এবং ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও ১ কোটি ৫০ লাথ ডোজ টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সব মিলে দাঁড়ায় ৫ কোটি ডোজ।

ইইউ কমিশন জানিয়েছে, বেঁধে দেওয়া এই সময়সীমা পার হয়ে গেলে সরবরাহকারীকে প্রতি ডোজ টিকার জন্য ১০ ইউরো (১১ দশমিক ৮ ডলার) করে জরিমানা গুণতে হবে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, কমিশনের আরও একটি মামলা আদালত খারিজ করে দিয়েছে। অন্যদের সঙ্গে করা চুক্তির চেয়ে ইইউ’র ‘বিশেষ গুরুত্ব’ পাওয়ার কোনো অধিকার নেই বলেও মত দিয়েছে আদালত।

টিকা সরবরাহে দেরি হওয়ার কারণে আর্থিক জরিমানা দাবি করে গত মাসে দ্বিতীয় মামলাটি করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা এক বিবৃতিতে বলেছে, “এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জটিল অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়ায় বিলম্ব ঘটেছে বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে।”

ইউরোপে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে নতুন করে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।