মিজোরামের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকা জানিয়েছে, মিয়ানমারের চিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সালাই লিয়ান লুয়াই গত সোমবার রাতে সীমান্ত শহর চাম্পাই হয়ে ভারতে ঢোকেন।
চিন রাজ্য মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এ রাজ্যের সঙ্গে মিজোরামের ছয় জেলার ৫১০ কিলোমিটার বিস্তৃত সীমান্ত রয়েছে।
সালাই লিয়ান লুয়াই মিয়ানমারে ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির দলের (এনএলডি) নেতা। ২০১৬ সালে এনএলডি ক্ষমতায় আসলে তিনি চিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
পালিয়ে গিয়ে মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৪ জন এনএলডি আইনপ্রণেতার মধ্যে তিনিও একজন। আর বাদবাকী শরণার্থীর মধ্যে আছে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।
ভোরতের রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের মোট সংখ্যা ৯ হাজার ২৪৭ জন। তারা বিভিন্ন জেলায় আশ্রয় নিয়ে আছে।
তাদের অনেককে রাজ্যের স্থানীয় লোকজন আশ্রয় ও খাবার দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
এনডিটিভি জানায়, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের ত্রাণসহায়তার জন্য সরকারের অর্থ বরাদ্দ করা এবং এ অর্থ খুব শিগগির ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটিতে আন্দোলন-বিক্ষোভ চলছে। এ আন্দোলন দমন করতে গিয়ে অন্তত ৮৫০ জনকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
জান্তার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা মানুষেরা সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। কয়েকটি রাজ্যে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জোর লড়াই চলছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় মিলিশিয়াদের বেশ কয়েকটি তুমুল লড়াই হয়েছে ভারতের সীমান্তবর্তী চিন রাজ্যে।
জান্তা সরকারের দমনাভিযানের মুখে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ঢুকছে। তাদের মধ্যে অনেক সময় ঢুকে পড়ছে গণতন্ত্রপন্থি যোদ্ধারাও। এ নিয়ে কিছুদিন আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।
ভারতের মিজোরাম, মনিপুর ও নাগাল্যান্ড রাজ্য মিলে মিয়ানমারের প্রায় ১৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়ে আছে। নাগরিক সমাজ ও সরকারি কর্মকর্তাদের ধারণা, আগামী কয়েক মাসে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।