পাকিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট ইসকান্দর মির্জার একমাত্র জীবিত পুত্রের মৃত্যু

পাকিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট ইসকান্দর মির্জার একমাত্র জীবিত পুত্র হুমায়ুন মির্জা ৯৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2021, 10:32 AM
Updated : 14 June 2021, 10:32 AM

রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের বেথেসডায় নিজ বাসভবনে তার মৃত্যু হয় বলে ডন অনলাইন জানিয়েছে।

১৯২৮ সালে ভারতের পুনেতে জন্ম নেওয়া হুমায়ুন ইসকান্দর মির্জা ও তার প্রথম স্ত্রী রিফাত বেগমের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন।

হুমায়ুন মির্জা ভারতের দুন স্কুলে পড়ার পর ব্রিটেনে পড়তে যান। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এমবিএ ডিগ্রি নেন। বিশ্ব ব্যাংকের উচ্চপদে চাকরি করা হুমায়ুন প্রথম পাকিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের মেয়েকে বিয়ে করলেও পরে ব্রাজিলীয় মারিল্লা মানদেল্লিকে বিয়ে করেন।

১৯৮৮ সালে বিশ্ব ব্যাংকের চাকরি থেকে অবসর নেন। তিনি ‘ফ্রম পলাশি টু পাকিস্তান: দ্য ফ্যামিলি হিস্টরি অব ইসকান্দর মির্জা’ ও ‘সান অব আ প্রেসিডেন্ট এন্ড এ্যায়া টু আ থ্রোন’ নামে দুটি বই লিখেছেন।

বাংলার এক সম্পদশালী সামন্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন হুমায়ুন। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সঙ্গে এই পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। হুমায়ুন মির্জার দাদা ফাতেহ আলি মির্জা মুর্শিদাবাদের শাসক নবাব পরিবারের লোক ছিলেন। এই পরিবার বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যাড় নবাব মীরজাফর আলী খানের (মীরজাফর) উত্তরাধিকারী। 

হুমায়ুন মির্জা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। কেতাদুরস্ত ভুট্টো ‘বাগ্মী ও বুদ্ধিমান’ ছিলেন বলে নিজের আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন তিনি।

গত সপ্তাহের প্রথমদিকে ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ডকে ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ বলে বর্ণনা করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হককে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা থেকে বিরত রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই সাক্ষাৎকারে দেশ বিভাগের সময় কলকাতার দাঙ্গা কথা উঠলে মহত্মা গান্ধী কীভাবে তার জীবন বাঁচিয়েছিলেন তা তুলে ধরেন তিনি।

“শহরটির মুসলিম প্রধান এলাকায় আমার হোস্টেল ছিল, সেটি একটি প্রধান লক্ষ্যস্থল ছিল। ‘মুসলমান মুর্দাবাদ’ শ্লোগান দিতে দিতে একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা এদিকে এগিয়ে আসছিল, … যাকে মনে হচ্ছিল অনন্তকাল, সেটা পরিবর্তিত হয়ে গেল, লোকজন ‘গান্ধী জি কি জয়’ বলে শ্লোগান দিতে লাগল।

“আস্তে আস্তে জনতার উত্তেজনা দূর হলে আমি ওই মহান মানুষটিকে ধন্যবাদ দিতে দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাই। বলি, আমার নাম হুমায়ুন, আমার বাবার নাম ইসকান্দর মির্জা। আমার জীবন বাঁচানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

“ওহ্, আমি তোমার বাবা ও তোমার দাদী, দিলশাদ বেগমকে চিনি। উদ্বিগ্ন হয়ো না, তুমি নিরাপদে যেন দেশ ছাড়াতে পারো তা আমি দেখবো,” গান্ধী এমনটি বলেন বলে জানান তিনি।