ইসরায়েলে নতুন জোট সরকার ঠেকানোর ডাক নেতানিয়াহুর

ইসরায়েলে বিরোধী নেতারা জোট সরকার গঠনে সমঝোতায় পৌঁছার পর এর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নতুন জোটের ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে পার্লামেন্টের ডানপন্থি সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2021, 04:12 PM
Updated : 3 June 2021, 04:14 PM

বিবিসি জানায়, নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বুধবার ইসরায়েলের ৮ টি বিরোধীদল একযোগে নতুন সরকার গঠনে কাজ করতে একমত হয়।

কিন্তু নতুন সরকার ক্ষমতা নিতে হলে এখনও পার্লামেন্টের সমর্থন প্রয়োজন। আর ইসরায়েলের পার্লমেন্ট নেসেটে এ নিয়ে ভোটাভুটি আয়োজনের কোনও দিনক্ষণ এখনও স্থির হয়নি।

যদিও ভোটাভুটি আগামী সপ্তাহেই হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর তা হলে নতুন গঠিত জোট উল্টে যাওয়ারও আশঙ্কা আছে।

জোট সরকার গঠনের ঘোষণা আসার পরই প্রথম প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নেসেটের ‘ডানপন্থিদের ভোটে নির্বাচিত’ সদস্যদেরকে এই জোটের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ক্ষমতা হারানোর আভাস পেয়ে তা ধরে রাখতে মরিয়া নেতানিয়াহু টুইটারে এক পোস্টে সতর্ক করে বলেছিলেন, প্রস্তাবিত নতুন জোট সরকার ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে।

ডানপন্থি রাজনীতিবিদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, “বামপন্থি সরকার গঠন করবেন না। এ ধরনের সরকার ইসরায়েল ও জনগণের জন্য বিপজ্জনক।”

পর্যবেক্ষকরা এরই মধ্যে বলেছেন, গত মার্চের ভোটে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি বেশির ভাগ আসনে জয় পেয়েও জোট গড়তে ব্যর্থ হওয়ার পর এখন নতুন জোট সরকার যাতে প্রয়োজনীয় সমর্থন না পায় সে চেষ্টা চালাবেন তিনি।

নতুন জোট সরকার গঠনে বুধবার শরিক দলগুলোর সঙ্গে একটি সমঝোতায় উপনীত হওয়ার কথা প্রেসিডেন্ট রুবেন রিভলিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা মধ্যপন্থী ইয়েশ আতিদ দলের ইয়ায়ের লাপিদ।

এই জোট সরকারে বেশ কিছু ছোট ও মাঝারি দলও শরিক হচ্ছে। তাদের মধ্যে আছে ইসরায়েলের ২১ শতাংশ আরব সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্বকারী দল দ্য ইউনাইটেড আরব লিস্ট। প্রথমবারের মত এরা ইসরায়েলের ক্ষমতার অংশ হতে যাচ্ছে।

শরিকদের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী লাপিদের জোটের প্রধন শরিক উগ্র জাতীয়তাবাদী ইয়ামিনা পার্টির নেতা নাফতালি বেনেট প্রথমে দুই বছরের জন্য জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন। এরপর পালাবদল হয়ে ২০২৩ সালের অগাস্টে প্রধানমন্ত্রী হবেন লাপিদ।

ছবি-স্ক্রিনশট: বিবিসি ভিডিও

তবে এই জোট নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ইসরায়েলি আরবদের প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য দলগুলো বলেছে, তারা বেনেটের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরোধিতা করবে। কারণ, বেনেট ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

অন্যদিকে, ডানপন্থি রাজনীতিবিদরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। লিকুদ পার্টির এক বিশিষ্ট সদস্য টুইটারে লিখেছেন, “বামপন্থিরা উল্লাস করছে। কিন্তু ইসরায়েলের রাষ্ট্রের জন্য এই দিন দুঃখের। জোটের ডানপন্থি দলগুলোর লজ্জিত হওয়া উচিত।”

কিন্তু ইসরায়েলের অন্যান্য জায়গায় আনন্দের আবহই দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীদের যারা নেতানিয়াহুর পদত্যাগ চাইছিলেন তারা রাস্তায় মেতেছেন উদ্দাম নাচে।

এমনই এক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমি মনে করি রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকদিন ধরে অচলাবস্থায় ছিল। আমাদের নতুন কিছু করার চেষ্টা করা উচিত। যদিও এতে কিছুটা আশঙ্কা আছে এবং অনেক কিছুই অজানা। তারপরও এ মুহূর্তে আমি আর কোনও বিকল্প দেখি না।”