পশ্চিমবঙ্গে আচমকা গ্রেপ্তার নেতা-মন্ত্রীরা, সিবিআই দপ্তরে মমতার ধর্না

ভারতে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের পর নারদা অর্থ কেলেঙ্কারিতে আচমকা চার নেতা-মন্ত্রীর গ্রেপ্তারি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে গোটা রাজ্য। ঠায় ছয় ঘণ্টা ধরে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইর সদরদপ্তরে ধর্না দিতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2021, 03:02 PM
Updated : 17 May 2021, 08:35 PM

‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ পত্রিকা জানায়, সোমবার সিবিআই মমতার রাজ্য সরকারের ২ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং সুব্রত মুখপাধ্যায়সহ তৃণমূলের প্রাক্তন ২ মন্ত্রী মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে নেওয়া হয় কলকাতার সিবিআই কার্যালয় নিজাম প্যালেসে। চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে সিবিআই কর্মকর্তারা চার্জশিট জমা দিতে পারেন- এমন জল্পনার মধ্যেই নেওয়া হয় এই পদক্ষেপ।

গ্রেপ্তারির খবর শুনে সকালেই নিজাম প্যালেসে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সেখানেই ধর্ণায় ছিলেন তিনি। গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চেয়ে কথাও বলেন সিবিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এমনকী এভাবে গ্রেফতারির প্রতিবাদও জানান মমতা। তিনি বলেন, “তাহলে আমাকেও গ্রেফতার করুন। নইলে সিবিআই দপ্তর ছাড়ব না।”

ওদিকে, সিবিআইয়ের আবেদনে বিশেষ আদালতে চলে চারজনের ভার্চুয়াল শুনানি। আটকদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চেয়ে আবেদন জানানো হয় আদালতে। কারণ হিসেবে বলা হয়, চারজন প্রভাবশালী হওয়ায় সাক্ষ্যপ্রমাণ লুট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে তাদের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। শুনানি শেষের পর রায় হওয়ার আগেই নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

ভারতীয় পত্রিকাগুলোতে বলা হয়েছে, রায়দান কয়েকঘণ্টা স্থগিত রাখার পর সোমবার বিকালে শেষ পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন চারজন।

তবে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তড়িঘড়ি হাই কোর্টে যায় সিবিআই। তাতে বিচারিক আদালতের জামিনের আদেশ খারিজ হয়ে যায় বলে আনন্দবাজার জানিয়েছে। হাই কোর্টের আদেশের পর তাদের কারাগারে নেওয়া হয় বলেও জানায় কলকাতার সংবাদপত্রটি।

তবে চার বছর আগের নারদা মামলায় এখন কেন গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নিল সিবিআই? এত পুরোনো মামলায় আটককৃতদের কী জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া মন্ত্রীদের কীভাবেই বা গ্রেপ্তার করা হল? এইসব প্রশ্ন তুলেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা।

তৃণমূল কর্মীরাও তাদের নেতা-মন্ত্রী গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে নিজাম প্যালেস ও রাজভবনের ভবন চত্বরে। জেলায় জেলায় বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন মোড়ে অবরোধ হয়েছে।

লকডাউন ভেঙে তারা বিক্ষোভ করেছে। করোনাভাইরাসের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বেশি মানুষের জমায়েত সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।