ডায়ানার সাক্ষাৎকার: তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ‘পদত্যাগ’ করলেন বিবিসির সেই সাংবাদিক

দুই যুগ আগে প্রিন্সেস ডায়ানার বিস্ফোরক এক সাক্ষাৎকার নিয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া বিবিসির সাংবাদিক মার্টিন বশির ‘স্বাস্থ্যগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2021, 06:41 AM
Updated : 16 May 2021, 07:02 AM

ওই সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে ডায়ানার অনুমতি পেতে বশির ‘অনৈতিক’ পথ নিয়েছিলেন কি না- সেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগ মুহূর্তে তার পদত্যাগের খবর এল।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিবিসির পক্ষ থেকে শুক্রবার তাদের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বশিরের পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়ে বলা হয়েছে, কয়েক মাস ধরে নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।

১৯৯৫ সালে ডায়ানাকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি করাতে মার্টিন বশির ‘ভুয়া নথি’ ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠার পর এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়।

আলোচিত ওই সাক্ষাৎকারে প্রিন্সেস ডায়ানার বিস্ফোরক বক্তব্যের পর ব্রিটিশ রাজ পরিবারে সঙ্কট দেখা দেয়, যার জেরে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।

বিবিসির একজন মুখপাত্রের বরাতে সিএনএন লিখেছে, সাবেক বিচারক লর্ড ডাইসন ‘শিগগিরই’ তার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন।

বশিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য তিনি এমন কিছু জাল নথি ব্যবহার করেছিলেন, যেগুলোতে মনে হয়- প্রিন্সেস ডায়ানার পেছনে বাকিংহাম প্যালেসের কর্মীদের লাগানো হয়েছে এবং নজরদারির জন্য তারা পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন।

বিবিসির সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার ম্যাট ওয়েইসলার সিএনএনকে বলেছিলেন, বশির বলেছিলেন তার কিছু ব্যাংক স্টেটমেন্ট দরকার। তখন তিনি বশিরের জন্য সেরকম ব্যাংক স্টেটমেন্ট ‘তৈরি করে’ দেন। 

প্রিন্সেস ডায়ানার ভাই চার্লস স্পেনসার দাবি করেছিলেন, বশির তাকে ওইসব জাল ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখিয়ে তার সঙ্গে ‘চালাকি’ করেন, তার বোনের সঙ্গে বশিরকে পরিচয় করিয়ে দিতে ‘প্রলুব্ধ’ করেন। 

ডায়ানা ব্যাপক আলোচিত ওই সাক্ষাৎকারে বশিরকে বলেন, যে তার সঙ্গে চার্লসের বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ‘আরেকজন’ রয়েছে, তিনি ইঙ্গিত করেন চার্লসের আত্মীয়া ক্যামিলা পার্কার বোলসের দিকে। ডায়ানার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ক্যামিলাকেই বিয়ে করেন চার্লস।

১৯৯৫ সালে ওই সাক্ষাৎকার প্রচারের সময় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রেস সেক্রেটারির দায়িত্বে থাকা চার্লস অ্যানসনকে সিএনএনকে বলেছিলেন, ওই সময় বাকিংহাম প্যালেস এ বিষয়ে অন্ধকারে ছিল। তাদের পক্ষে বেশি কিছু বলা সম্ভব ছিল না।

বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভিড গত বছর এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, এ বিষয়টির গভীরে যেতে তিনি ‘সম্ভব সবটুকু’ করবেন। এরপরই তিনি বশিরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের ঘোষণা দেন।

অভিযোগে বিষয়ে বশির প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। শুক্রবার বিবিসির প্রেস অফিস থেকে জানানো হয়েছে, “মার্টিন বশির চাচ্ছেন না গণমাধ্যম তার সঙ্গে যোগাযোগ করুক এবং এ মুহূর্তে এ বিষয়ে তিনি জনসম্মুখে কোনো বক্তব্যও দেবেন না।”

শুক্রবার বিবিসির বার্তা বিভাগের উপপরিচালক জনাথন মুনরো একটি ইমেইলে কর্মীদের জানান, মার্টিন বশির করপোরেশন ছেড়ে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে তিনি বশিরের শারীরিক অসুস্থতার কথাই উল্লেখ করেন।