বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির নামকরা একদল ব্যক্তির প্রতিবাদের মুখে ‘ত্রেক্কানি’ অনলাইন অভিধান কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
‘puttana’ (বেশ্যা) এবং ‘cagna’ (দুশ্চরিত্রা) এর মত শব্দ, যেগুলো নারীদের অবমাননাকর হিসেবে উপস্থাপন করে, এমন আরও বেশ কিছু শব্দ অভিধানটি থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে।
অভিধানটি থেকে এধরনের শব্দ সরিয়ে ফেলার দাবিতে গত মার্চে সোচ্চার হন ইতালির লেখক, আইনজীবীসহ নাগরিক সমাজের একদল প্রতিনিধি।
তাদের ওই প্রচারাভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মারিয়া বিয়েত্রিচ গিওভানার্দি বলেন, ত্রেক্কানি অভিধান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সমাজে নারীর যে সমান ভূমিকা, তা শব্দের সংজ্ঞার ক্ষেত্রেও তুলে ধরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে তারা অভিধান আরও পর্যালোচনা করবে।
তাছাড়া সমকামী, উভকামী ও রূপান্তরকামীসহ অন্যান্য সম্পর্ক বোঝানোর জন্য উপযুক্ত শব্দও অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওই অভিধান কর্তৃপক্ষ।
ত্রেকানি অভিধানের একজন মুখপাত্র বলেন, সমাজ ও সংস্কৃতির বিবর্তনের পূর্বাপর সম্পর্ক নিয়ে ‘ধারাবাহিক গবেষণার অংশ হিসেবে’ তারা অভিধানে এই পরিবর্তন এনেছে।
গত বছর অক্সফোর্ড অভিধানেও এমন কিছু পরিবর্তন আনাতে সফল হওয়া গিওভানার্দি বলেন, ত্রেক্কানি অভিধান অনলাইনে সহজে ব্যবহারযোগ্য, ফলে এটা সবাই ব্যবহার করে।
“এটা যেহেতু বহুল ব্যবহৃত, এটা নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে সেখান থেকে এরকম বিষাক্ত শব্দ যাতে না ছড়ায়।”
গিওভানার্দির নেতৃত্বে এরকমই একটি প্রচারাভিযানে লাখো মানুষের সই নিয়ে আবেদন করার পর গত নভেম্বরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস তাদের অভিধানগুলোতে ‘নারী’ শব্দের সংজ্ঞা হালনাগাদ করে।
ইংরেজি ভাষার খ্যাতনামা ওই অভিধানে ‘নারী’ (woman) শব্দের সমার্থক হিসেবে পারিভাষিক শব্দ bitch, bird ও bint শব্দগুলো রাখা হয়েছিল, যা সমালোচনার জন্ম দেয়।
গিওভানার্দি জানিয়েছেন, তার এই প্রচারাভিযানের সূত্র ধরে গ্রিস, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে একই ধরনের প্রচার শুরু করতে আগ্রহীরা যোগাযোগ করেছেন।
তিনি বলেন “আমি নিশ্চিত, অনেক মানুষ এসব শব্দ নিয়ে ক্ষুব্ধ এবং তারা এসব সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে চায়। কারণ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই ব্যাপকভাবে সেক্সিজম ছড়িয়ে থাকার চরম সব প্রমাণ মিলেছে।”