কয়েক মুহূর্তেই কোভিড শনাক্ত করবে মৌমাছি

কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল পাওয়ার সময় কমাতে এবার বিজ্ঞানীরা বেছে নিয়েছেন মৌমাছি। নেদাল্যান্ডসের একদল গবেষক মৌমাছিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসব মৌমাছি গন্ধ শুঁকে শনাক্ত করতে পারবে কোভিড আক্রান্তের নমুনা। এতে পরীক্ষার ফল মিলবে কয়েক সেকেন্ডেই।

>>রয়টার্স
Published : 9 May 2021, 04:18 PM
Updated : 9 May 2021, 04:18 PM

বিশেষ এই মৌমাছি প্রশিক্ষণ চলছে নেদারল্যান্ডসের ওয়াগানেইগা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-পশুচিকিৎসা গবেষণাগারে।

এই প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ায় মৌমাছিগুলোকে প্রতিবার করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ কোনও ব্যক্তির নমুনার সংস্পর্শে আনার পরই পুরস্কার হিসাবে চিনি মেশানো পানি পান করতে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ না এমন নমুনার ক্ষেত্রে মৌমাছিগুলোকে এমন কোনও পুরস্কার দেওয়া হয়না।

এভাবে মৌমাছিরা এই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে দেখা যায়, করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের নমুনার গন্ধ শুঁকার পরই মৌমাছিগুলো চিনি মেশানো পানি পাওয়ার জন্য তাদের শুঁড় বাড়িয়ে দেয়।

প্রশিক্ষণ সম্পর্কে এমন কথাই জানিয়েছেন এই প্রকল্পে কাজ করা ভাইরাস-বিদ্যার প্রফেসর উইম ভ্যান ডার পোয়েল।

তিনি বলেন, মৌয়ালের কাছ থেকে সাধারণ মৌমাছি সংগ্রহ করে সেগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হয়। এতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠার পর মৌমাছিগুলোর সামনে কোভিড পজিটিভ নমুনা রাখা হয়। তারপরই দেওয়া হয় চিনিপানি। এই চিনিপানি নিতে মৌমাছিদের স্ট্রয়ের মতো লম্বা শুঁড় বাড়ানোটাই কোভিড ‘পজিটিভ’ ফল নিশ্চিত করে।

গবেষকরা বলছেন, প্রচলিত উপায়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পেতে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মৌমাছি দিয়ে কোভিড শনাক্ত করলে তাৎক্ষণিকভাবে ফল পাওয়া যাবে। তাছাড়া, এটি খুবই সাশ্রয়ীও হবে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা যেখানে দুর্লভ এমন দেশগুলোতে এ পদ্ধতি ভাল কাজে দেবে।

বেলজিয়ামের এক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক দির্ক দে গ্রাফ বলছেন, আগামী দিনগুলোতে এই কৌশল করোনাভাইরাসের প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির বিকল্প হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন না।

গ্রাফ বলেন, এই কৌশল মন্দ নয়। কিন্তু ‍তিনি মৌমাছিকে কোভিড শনাক্তের কাজে না লাগিয়ে বরং অন্য কাজে লাগাতে চাইবেন। তিনি জানান, এর আগে ১৯৯০-এর দশকে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর এমন কৌশল কাজে লাগিয়েছিল মূলত বিস্ফোরক ও বিষাক্ত জিনিস শনাক্ত করতে।

নিরাপদে বিস্ফোরক শনাক্ত করা ছাড়াও মেডিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষাতেও নিরাপত্তার খাতিরে প্রজাপতি, মৌমাছি ও ভিমরুলের ব্যবহার রয়েছে। তবে নেদারল্যান্ডসের এই মৌমাছি প্রকল্পের সত্যিকারের কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এখনও তেমন কিছু জানা যায়নি বলে জানান গ্রাফ।