কাবুলে স্কুলে গাড়ি বোমা, মর্টার হামলায় নিহত বেড়ে ৬৮

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি স্কুলের সমানে গাড়ি বোমা ও মর্টার হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৬৮ জন হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১৬৫ জন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 03:23 PM
Updated : 9 May 2021, 02:01 PM

শনিবারের এসব বিস্ফোরণে হতাহতদের অধিকাংশই ছাত্রী বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। এ হামলার জন্য তালেবান বিদ্রোহীদের দায়ী করেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।

আফগানিস্তানের একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হতাহতদের অধিকাংশই সায়েদ উল শুহাদা স্কুলের শিক্ষার্থী, তারা স্কুল থেকে বের হয়ে আসার সময় বিস্ফোরণগুলো ঘটে এবং হাসপাতালে ভর্তি আহতদের অনেকের অবস্থাই গুরুতর।

আফগানিস্তানের টোলোনিউজ টেলিভিশন চ্যানেলের ফুটেজে স্কুলটির সামনের রক্তস্নাত রাস্তার মধ্যে বই ও স্কুল ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা গেছে, হতাহতদের উদ্ধারে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে জড়ো হচ্ছেন।

“এটি একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ছিল, স্কুলের প্রবেশ পথের সমানে এটি ঘটে,” রয়টার্সকে বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি জানান, হতাহতদের মধ্যে সাত-আট জন ছাড়া বাকি সবাই স্কুলের ছাত্রী, স্কুল শেষে বাড়ি ফিরছিল তারা।

সায়েদ উল শুহাদা স্কুলটি ছেলে ও মেয়েদের একটি যৌথ উচ্চ বিদ্যালয়, এখানে তিনটি শিফটে ক্লাস হয় এবং দ্বিতীয়টি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাজিবা আরিয়ান। আহতদের অধিকাংশই ছাত্রী বলে জানিয়েছেন তিনি।

আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তারপর থেকে কাবুলজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করে উচ্চ সতর্কাবস্থা বজায় রাখা হয়েছে।

আফগান কর্মকর্তারা বলছেন, তালেবান সারা দেশজুড়ে হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। শেষ খবর পর্যন্ত শনিবারের হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। এ হামলার নিন্দা জানিয়ে তালেবান বিদ্রোহীরা এর সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ।

কাবুলের পশ্চিমাংশের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় হামলাটি হয়েছে। এর জন্য প্রেসিডেন্ট গনি তালেবানকে দায়ী করলেও গত কয়েক বছর ধরে এই এলাকাটিতে বার বার নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা। এর মধ্যে প্রায় এক বছর আগে একটি মাতৃসদনে চালানো হামলার ঘটনাও রয়েছে।

গনি বলেছেন, “তালেবান তাদের অবৈধ লড়াই ও সহিংসতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে আবারও দেখালো, তারা চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ ও মূলগত সমাধানে শুধু উদাসীনই না বরং পরিস্থিতি আরও জটিল করতে চায়।”

হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের আফগানিস্তান মিশন টুইটারে বলেছে, “কাবুলের দাস্ত-ই-বারচি এলাকায় ভয়ঙ্কর এ হামলা ঘৃণ্য সন্ত্রাসবাদী কাজ। একটি গার্লস স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো হামলাটি আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের ওপর আক্রমণের শামিল।”