হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মী জশুয়ার কারাদণ্ড

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মী জশুয়া ওংকে অননুমোদিত এক আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার দায়ে ১০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2021, 10:02 AM
Updated : 6 May 2021, 10:02 AM

১৯৮৯ সালে বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন চত্বরে দমনাভিযানে হতাহতদের স্মরণে ওই আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছিল। ১৯৯০ সাল থেকে হংকংয়ে প্রতিবছর এ কর্মসূচী পালন করা হচ্ছিল। 

কিন্তু গত বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পুলিশ প্রথমবারের মতো শহরটিতে এ কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। 

তা অমান্য করেই গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মীসহ হাজার হাজার মানুষ আলো জ্বালিয়ে হতাহতদের স্মরণ করেছিল বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

ওংসহ গণতন্ত্রপন্থি যে আন্দোলনকর্মীরা এতে অংশ নেন পরে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনে পুলিশ।

চীনের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে অননুমোদিত একটি সমাবেশ আয়োজনে জড়িত থাকা এবং তাতে অংশ নেওয়ার পৃথক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ওং এখন কারাগারেই আছেন।

এর আগে আরও দুটি পৃথক অভিযোগে তাকে যথাক্রমে সাড়ে ১৩ মাস ও চার মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত হংকংয়ের এ ২৪ বছর বয়সী আন্দোলনকর্মী কারাগারে ওই দণ্ডই ভোগ করছেন। সেগুলোর সঙ্গে এবার আরও ১০ মাসের কারাদণ্ড যোগ হবে।

তিয়ানআনমেনের ঘটনা স্মরণে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার অভিযোগে গত শুক্রবার ওংয়ের পাশাপাশি গণতন্ত্রপন্থি হিসেবে পরিচিত তরুণ আন্দোলনকর্মী লেস্টের শাম, টিফানি ইউয়েন ও জেনেলে লিউংও দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবারের রায়ে শামকে ছয় মাস এবং বাকি দুজনের প্রত্যেককে চার মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

চীনের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ডের মধ্যে কেবল হংকং আর ম্যাকাউতেই তিন দশকেরও বেশি সময় আগে তিয়ানআনমেন চত্বরের ওই দমনাভিযান নিয়ে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়।

তিয়ানআনমেন স্মরণে হংকংয়ের আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে এ বছরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে জনস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগকেই কারণ হিসাবে দেখাচ্ছেন শহরটির কর্মকর্তারা।

বিবিসি লিখেছে, ১৯৮৯ সালের এপ্রিলে চীনের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন চত্বরের দখল নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিশাসিত দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচির সূচনা করেছিল। তারা ছয় সপ্তাহ চত্বরটির দখল রেখেছিল, তাদের কর্মসূচিতে ১০ লাখের মতো মানুষ অংশ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

ওই বছরের ৩ জুন রাতে নিরাপত্তা বাহিনী আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে অভিযানে নামে; তারা ট্যাঙ্কসহ নানা সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে আসে এবং তিয়ানআনমেন চত্বর ও এর আশপাশে থাকা লোকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।

ওই অভিযানে চত্বরের মধ্যে থাকা কেউ গুলিতে নিহত হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও সে রাতে কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে অনুমান পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের।