বাড়ছে লাশের সারি, দিল্লিতে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী চিতা

করোনাভাইরাস মহামারীর কেন্দ্র হয়ে ওঠা ভারতের শ্মশানগুলোতে কেবলই বাড়ছে লাশের সারি। শবদাহ করে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না রাজধানী দিল্লির শশ্মানকর্মীরা। তাই মৃতদেহের চাপ সামলাতে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী চিতা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2021, 04:58 PM
Updated : 27 April 2021, 04:58 PM

দিন-রাত চলছে শবদাহের কাজ। পরিস্থিতি সামলাতে শ্মশানের পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি পার্ক ও অন্যান্য খোলা জায়গাগুলোকেও শবদাহের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিবিসি জানায়, পার্কিং লট, পার্ক ও খোলা মাঠে চিতা তৈরি করা হচ্ছে। লাশের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে স্বজনদেরকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

সোমবার শুধু দিল্লিতেই সরকারি হিসাবে ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতগুলো মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে দরকার পড়েছে বাড়তি জায়গার। দিল্লির সরাই কালে খান শ্মশানে নতুন অন্তত ২৭টি চিতা তৈরি করা হয়েছে।

আরও ডজনখানেক চিতার কাঠামো তৈরি করা হয়েছে পার্কে। নগরীর যমুনা নদীর তীরে দাহ করার আরও জায়গা খুঁজছেন কর্মকর্তারা। ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকাকে এক শ্মশানকর্মী জানিয়েছেন, তারা ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত অনবরত শবদাহ করে যাচ্ছেন।

দিল্লিতে চিতা জ্বালানোর জন্য কাঠের প্রয়োজন মেটাতে কর্তৃপক্ষ নগরীর পার্কের গাছ কেটে ফেলেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। মৃতদের স্বজনদেরকেও কাঠ মজুত করা থেকে বাদবাকী কাজে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়।

পূর্ব দিল্লির ঘাজিপুর শ্মশানে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় ২০টি চিতা তৈরি করা হয়েছে। একজন কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে বলেছেন, লাশের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় আরও চিতা তৈরি করা প্রয়োজন। একটি শব দাহ করতে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে। এজন্য লাশ নিয়ে আসা স্বজনদের তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

অন্যান্য শ্মশানের অবস্থা আরও শোচনীয়। সেসব শশ্মানের পরিসর বাড়ানোর কোনও জায়গাই নেই বলে বিবিসি-কে জানিয়েছেন সুনীল কুমার নামের এক বাসিন্দা।

দিল্লির জনসংখ্যার দিক দিয়ে হিসাব করলে শবদাহের জন্য জায়গার চাহিদা সহসাই কমার সম্ভাবনা নেই। কারণ, হাসপাতালগুলো যেভাবে রোগীতে পরিপূর্ণ আর অক্সিজেনের জন্য যে হাহাকার- তাতে রোগীর মৃত্যুতে লাশের সারি কেবল আরও দীর্ঘই হচ্ছে।