সরকারি একটি ভবনে তাদের ১৪ দিন আলাদা করে রাখা হবে বলে ওই আবাসনের পরিচালনা কোম্পানি এক চিঠিতে জানিয়েছে।
এসময় কোভিড- ১৯ আক্রান্ত শ্রমিকদের মধ্যে যারা দ্বিতীয় দফায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের শনাক্ত করার জন্যও পরীক্ষা চালানো হবে।
বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, দ্বীপ রাষ্ট্রটির ওয়েস্টলাইট উডল্যান্ডস ডরমিটরি থেকে ওই শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ডরমিটরি কর্তৃপক্ষকের এ বিষয়ক চিঠিটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ওয়েস্টলাইট শ্রমিক আবাসনের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ১০টি বাসও দেখেছেন। বাসে করে ওই ভবন থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে নিতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার রাতে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে সেখানে সংক্রমিত ১১ জনকে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে । এদের মধ্যে ১০ জন আগেও একবার আক্রান্ত হওয়ার পর সংক্রমণ মুক্ত হয়েছিলেন।
সোমবার ৩৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি শ্রমিকের কোভিড- ১৯ পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। গত ১৩ এপ্রিল ওই শ্রমিক করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন। তার কক্ষের অপর শ্রমিকেরও কোভিড- ১৯ পজিটিভ এসেছে।
নিয়মিত পরীক্ষায় সোমবার বাংলাদেশি এ শ্রমিককের সংক্রমণ শনাক্ত হয় । চলমান ওই পরীক্ষায় বাকিদের শনাক্তের খবর বুধবার জানানো হয়।
মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “আক্রান্তদের দ্রুত আলাদা করে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেসকে (এনসিআইডি) জানানো হয়েছে। তারা দ্বিতীয় বারের মতো সংক্রমিত কিনা তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।”
করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ফের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে জানিয়ে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সু লি ইয়াং এ শ্রমিকদের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে বলেন, “ঘটনাটা ধারণারও আগে ঘটল।”
এর আগে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায় উপসর্গসহ ভাইরাসজনিত রোগের ক্ষেত্রে টিকা কাজ করলেও এ বিষয়ে আরও গবেষণা দরকার।
করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণ এবং বর্তমানে যেসব টিকা পাওয়া যাচ্ছে সেসব কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর এ ঘটনায় তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
বুধবার শ্রমিক আবাসনের এ ব্লকে তৃতীয় এবং অষ্টম তলার শ্রমিকদের পরীক্ষা করা হয়। সোমবার শনাক্ত হওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকও এ ব্লকেরই বাসিন্দা।
নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর স্থানীয় ব্যপস্থাপনাতেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল।
করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর দেশটিতে আক্রান্ত ৬০ হাজার মানুষই ছিল জনাকীর্ণ শ্রমিক আবাসনের বাসিন্দা। এসব আবাসনের বেশিরভাগ বাসিন্দাই দক্ষিণ এশীয় কম মজুরির শ্রমিক। ওই সময় এসব আবাসনে লকডাউন দেওয়া হয়েছিল।
সবশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে শ্রমিক আবাসনের বাসিন্দাসহ ১০ জনেরও বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পরে। এরপর থেকে আক্রান্তের আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
আবাসনের শ্রমিকদের বেশিরভাগই এখনও দ্বীপ রাষ্ট্রটির বাকি জনসংখ্যা থেকে বিচ্ছিন্ন। কেবল কাজের জন্য বাইরে যাওয়ার অনুমোদন আছে তাদের।