২০২০: মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে শীর্ষ ৫ দেশের চারটি মধ্যপ্রাচ্যের

গত বছর সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা পাঁচ দেশের চারটিই মধ্যপ্রাচ্যের বলে জানিয়েছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2021, 10:01 AM
Updated : 21 April 2021, 10:45 AM

তাদের হিসাবে ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে যে ৪৮৩টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবর পাওয়া গেছে তার ৮৮ শতাংশই ইরান, মিশর, ইরাক ও সৌদি আরবে হয়েছে, জানিয়েছে বিবিসি।

বিশ্বের বেশিরভাগ অংশ যখন প্রাণঘাতী এক ভাইরাসের হাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর দিকে মনোযোগী ছিল তখনও মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশগুলো তাদের ‘নির্মম ও ঠাণ্ডা জেদের’ প্রদর্শনী করেছে বলে অভিযোগ অ্যামনেস্টির।

গতবছর বিশ্বজুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিমাণ এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল বলে জানিয়েছে সংগঠনটি; অবশ্য তাদের এ হিসাবে চীনে কার্যকর হওয়া মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

চীন প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে বলে অনুমান অ্যামনেস্টির। কিন্তু দেশটিতে এ সংক্রান্ত তথ্য ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার’ অংশ হওয়ায় প্রকৃত সংখ্যা অজ্ঞাতই রয়ে যায়। গোপনীয়তার কারণে উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনামের তথ্য যাচাইও অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ২০২০ সালে ১৮টি দেশে ৪৮৩টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা ২০১৯ সালে কার্যকর হওয়া ৬৫৭টি মৃত্যুদণ্ডের তুলনায় ২৬ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে কার্যকর হওয়া এক হাজার ৬৩৪টির তুলনায় ৭০ শতাংশ কম।

গত বছর কেবল মধ্যপ্রাচ্যেই মোট ৪৩৭টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ৫৭৯।

সৌদি আরব আগের বছরের তুলনায় ৮৫ শতাংশ কম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে; ২০২০ সালে সেখানে মাত্র ২৭ জনের প্রাণদণ্ড কার্যকর হয়েছে বলে বুধবার অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে ইরাকেও, গত বছর দেশটিতে কার্যকর হওয়া এ ধরনের সাজার সংখ্যা ছিল ৪৫।

তবে মিশরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৩০০ শতাংশ। ১০৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে দেশটি গত বছর এ সংক্রান্ত তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে।

২০২০ সালে ২৪৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তালিকায় চীনের পেছনে থেকে দ্বিতীয় স্থানেই রয়ে গেছে ইরান।

অ্যামনেস্টি বলছে, দেশটির কর্তৃপক্ষ ভিন্নমতাবলম্বী, বিক্ষোভকারী ও জাতিগত সংখ্যালঘু বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডকে ‘রাজনৈতিক নিপীড়নের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার ক্রমাগতভাবে বাড়াচ্ছে।

ইরান গত বছর যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে, তাদের মধ্যে এমন তিনজনও ছিল, অপরাধ সংঘটনের সময় যাদের বয়স  ১৮-র কম ছিল। এ তিনজনের মৃত্যুদণ্ডকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লংঘন বলে অভিহিত করছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি।

দুই দশক পর প্রথম একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কাতার ‘পেছনে হাঁটার উদ্বেগজনক পদক্ষেপ’ নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছে অ্যামনেস্টি। দেশটিতে খুনের দায়ে অভিযুক্ত এক নেপালির মৃত্যুদণ্ড গত বছরের মে-তে মাসে ফায়ারিং স্কোয়াডে কার্যকর করা হয়।

ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ১৭ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। দেশটি গত বছর ছয় মাসের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।

ভারত, ওমান, কাতার ও তাইওয়ানেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর অব্যাহত আছে।