জনসনের টিকায় রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি খুবই কম, বলছেন ইইউ বিশেষজ্ঞরা

জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড-১৯ টিকা থেকে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ঝুঁকি খুবই কম। তাই এই উপসর্গকে ‘খুবই বিরল’ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে ধরে নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ)।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2021, 04:53 PM
Updated : 20 April 2021, 07:27 PM

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ইএমএ এর আগে জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গ দেখা দেওয়ার সম্ভাব্য যোগসূত্র খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।

তবে তারা জোর দিয়েই বলছে, এই কোভিড টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকির চেয়ে উপকারই অনেক বেশি।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে জনসনের টিকা নেওয়া ৭০ লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে মাত্র ৮ জনের দেহে রক্ত জমাট বাঁধার এই বিরল উপসর্গ দেখা গেছে। এর মধ্যে মারা গেছে একজন।

ইএমএ কী বলেছে?

ইএমএ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গকে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার খুব ‘বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার’ তালিকাতেই রাখা উচিত।”

 “যুক্তরাষ্ট্রে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনাগুলো ঘটেছে টিকা নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর ৬০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে। তাদের বেশির ভাগই ছিল নারী।”

“রক্তে প্লাটিলেট কম থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার সম্পর্ক এর একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে। কিন্তু কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে মানুষের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি যতটা বেশি, টিকা গ্রহণের কারণে সেটা হওয়ার ঝুঁকির তার চেয়ে অনেক কম।”

কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এবং মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি।

তাই ইএমএ বলছে, ‘‘কারও দেহে একসঙ্গে প্লাটিলেট কম থাকার এবং টিকা গ্রহণের ফলে রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হওয়া খুবই বিরল ঘটনা। তার ওপর সবচেয়ে বড় কথা, জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা গ্রহণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকির চেয়ে লাভ অনেক বেশি।”

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধার উপসর্গ আর এখন জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার ক্ষেত্রে দেখা দেওয়া সেই একই উপসর্গ খুবই বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকার মানে এই নয় যে টিকাগুলো অনিরাপদ।

 বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই টিকার সম্ভাব্য ঝুঁকির চেয়ে টিকা নিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখাটা বেশি ভাল। আর যে কোনও অনুমোদিত চিকিৎসা কিংবা টিকারই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।

ইএমএ রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে। এর আগে রক্ত জমাট বাঁধার কয়েকটি ঘটনা সামনে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দেশটিতে জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড-১৯ টিকা স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছিল।

যার ভিত্তিতে গত সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ আফ্রিকা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাদান কার্যক্রম স্থগিত করে।

গত ৭ এপ্রিল ইএমএ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার বিষয়েও একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছিল।

ওই সময়ে ইউরোপে আড়াই কোটির বেশি মানুষকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৬ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার বিরল উপসর্গ দেখা দেয়।

পরে যুক্তরাজ্য সরকার ৩০ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়।