মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর অবরোধ আরোপের মধ্যেই দেশটির সংকট নিয়ে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান।
Published : 20 Apr 2021, 06:13 PM
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, আসিয়ানের যৌথ সম্পর্ক বিভাগের সহকারী পরিচালক রোমিও জুনিয়র আবাদ আর্কা জানিয়েছেন, শনিবার জাকার্তায় আসিয়ান সদর দপ্তরে সম্মেলন শুরু হবে। করোনাভাইসের কারণে এসময় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে।
মিয়ানমারকে অস্থিরতা ও সহিংসতার পথ থেকে সরিয়ে আনতে একটি উপায় বের করার চেষ্টা করছে ১০ সদস্য রাষ্ট্রের জোট আসিয়ান।
রাষ্ট্র নেতাদের এই সম্মেলনে কারা সরাসরি উপস্থিত থাকবেন তা এখনো পরিষ্কার না হলেও মিয়ানমারের একজন সরকারি কর্মকর্তা শনিবার জানিয়েছেন, দেশটির জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং জাকার্তায় যাবেন।
এবছর আসিয়ানের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্র ব্রুনেইর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মেলন আয়োজন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী। তারপর থেকে সেখানে অভ্যুত্থানবিরোধী টানা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৭৩৮ জনের বেশি মানুষ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর হাতে নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেশী দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে মিয়ানমারের সংকট নিরসন করতে চাইছে। তারা দেশটির সেনাবাহিনী এবং উৎখাত হওয়া সরকারের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার কথা বলছে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেই প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার কোনো ইঙ্গিত এখনো পাওয়া যায়নি।
সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ‘স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল’ এর নয় সদস্যের সম্পদ জব্দ এবং তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা জানায়। অভ্যুত্থানের একদিন আগে এই কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল। তথ্যমন্ত্রী উ চি নাইং এর ওপরও অবরোধ আরোপ করা হয়েছে।
এর আগে জাতিসংঘও একই পদক্ষেপে কথা জানিয়েছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে মিন অং হ্লাইং এবং অভ্যুত্থানের পর থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা মিন্ট সোয়েকে গত মাসেই কালো তালিকাভুক্ত করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এদিকে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী একটি পক্ষ শুক্রবার দেশটিতে জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) গঠনের ঘোষণা দেয়। যাদের মূল লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়।
এনইউজি সরকারে মিয়ানমারের উৎখাত হওয়া সরকারের এমপি, গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের নেতা এবং নানা আদিবাসী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা রয়েছেন। অভ্যুত্থানের পর থেক বন্দি অং সান সু চির নামও এতে আছে। তাদের দাবি, তারা মিয়ানমারের বৈধ সরকার।
এনইউজি থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের স্বীকৃতি দেওয়ার এবং আসিয়ান কমিটিকে তাদের সম্মেলনে মিন অং হ্লাইংকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে তাদের আমন্ত্রণ জানানো আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমারে সেনাঅভ্যুত্থানের পরপরই গত ৫ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া দেশটির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আসিয়ানের বিশেষ বৈঠক আয়োজনের আহ্বান জানায়। মিয়ানমার আসিয়ানভুক্ত দেশ।