মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী ‘জাতীয় ঐক্যে সরকার’

মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ গঠন করা হয়েছে। জান্তা বিরোধীপক্ষ শুক্রবার সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়।

>>রয়টার্স
Published : 16 April 2021, 02:37 PM
Updated : 16 April 2021, 08:40 PM

অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া পার্লামেন্ট সদস্য, অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের নেতা এবং জাতিগত সংখ্যালঘু নেতাদের নিয়ে এ সরকার গঠন করা হয়েছে।

তারা জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য সেনাবাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকে সেখানে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে।

অভ্যুত্থানের পর লাখ লাখ মানুষ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্রপন্থি নেতা অং সান সু চির মুক্তি দাবিতে সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত সাতশ’র বেশি মানুষ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

গত বছর নভেম্বরে বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতায় এসেছিল সু চি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। নভেম্বরের ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতার দখল নেয় সেনাবাহিনী।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার ১০ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায় গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের নেতা মিন কো নাইং ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ গঠনের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘‘দয়া করে জনগণের সরকারকে স্বাগত জানান।”‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ ব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানান মিন কো নাইং।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সেনাবাহিনীকে সমূলে উৎপাটনের চেষ্টা করছি। এজন্য আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।”

জাতীয় ঐক্য সরকারের বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়েছে।

জাতীয় ঐক্য সরকারের মূল লক্ষ্যের একটি আন্তর্জাতিক সমর্থন ও স্বীকৃতি আদায়।

ওই সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ডা. ‍সাসা বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে মিয়ানমারের জনগণ আমাদের নেতা নির্বাচিত করেছেন। তাই যদি স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব আমাদের অস্বীকার করে তবে তারা গণতন্ত্রকেই অস্বীকার করবে।”

আন্তর্জাতিক অঙ্গন, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে অবশ্য ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে; আরোপ করা হচ্ছে নানা নিষেধাজ্ঞা।

যদিও ওই চাপের কাছে মাথা নিচু করার কোনো লক্ষণ এখনও মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী জান্তাবাহিনীর মধ্যে দেখা যায়নি। এছাড়া, পশ্চিমা চাপ উপেক্ষা করেই তাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার অতীত অভিজ্ঞতাও আছে।