রাশিয়ার বিরুদ্ধে `নতুন নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কথিত হস্তক্ষেপের এবং বিদ্বেষপরায়ণ সাইবার কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2021, 05:31 AM
Updated : 15 April 2021, 05:51 AM

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলে বিষয়টির সম্পর্কে অবহিত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

আরেকটি সূত্রের বরাতে সিএনএনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অবরোধ আরোপের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে।

ওই ব্যক্তিদের একজন জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে কালোতালিকাভুক্ত করা হতে পারে, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণাও আসতে পারে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিকভাবে হোয়াইট হাউজ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোন মন্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যকার বিরাজমান শীতল সম্পর্ককে আরও নাজুক করে তুলবে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে পশ্চিমাদের স্নায়ুর পরীক্ষা নিচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্তৃত পরিসরের এই অবরোধ অংশত সাম্প্রতিক সাইবার হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সোলারউইন্ডস করপোরেশনের তৈরি করা সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ভেদ করার যে ঘটনা ঘটেছে তারই প্রতিক্রিয়ায় আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার; এই সাইবার হামলার জন্য রাশিয়া দায়ী বলে অভিযোগ তাদের।

সাইবার হামলার ফলে হ্যাকাররা সোলারউইন্ডস করপোরেশনের পণ্য ব্যবহার করা অসংখ্য মার্কিন কোম্পানির এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্যে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ গত ডিসেম্বরে শনাক্ত হওয়া এই হামলাকে ‘বিশ্বে এ যাবৎ ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে স্পর্শকাতর হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কথিত হস্তক্ষেপের জন্য মস্কোকে শিক্ষা দেওয়ার একটা অভিপ্রায় আছে ওয়াশিংটনের। মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত ওই নির্বাচনের ফল বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দিক থেকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবরোধ আরোপের পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তিনি একজন ‘খুনি’ মনে করেন, গত মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এমন মন্তব্যে দুই দেশের সম্পর্ক স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী একটি নতুন সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। 

মঙ্গলবার এক ফোনকলে বাইডেন পুতিনকে বলেছেন, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ‘দৃঢ়’ পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। ফোনকলের বিষয়ে অবগত কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে এই তথ্য দিয়েছে রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, একসঙ্গে কাজ করার মতো ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে ‘তৃতীয় একটি দেশে’ বৈঠকে বসার জন্য পুতিনকে প্রস্তাব দিয়েছেন বাইডেন।

গত কয়েক সপ্তাহে ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ঘটনায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে নেটোর সদস্য দেশগুলো।

যুক্তরাষ্ট্র নতুন অবরোধ ঘোষণা করতে পারে এমন গুঞ্জনের প্রতিক্রিয়ায় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী ও অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ যেকোন বাজে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হতে আমাদের বাধ্য করেছে।”