আটকা পড়া জাহাজ মুক্ত, ফের সচল সুয়েজ খাল

মিশরের সুয়েজ খাল আড়াআড়িভাবে বন্ধ করে দিয়ে আটকা পড়া বিশাল কন্টেইনারবাহী জাহাজটিকে মুক্ত করার পর বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথটি ফের সচল হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2021, 04:20 AM
Updated : 30 March 2021, 05:06 AM

শরের সুয়েজ খাল আড়াআড়িভাবে বন্ধ করে দিয়ে আটকা পড়া বিশাল কন্টেইনারবাহী জাহাজটিকে মুক্ত করার পর বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথটি ফের সচল হয়েছে।

স্থানীয় সময় সোমবার রাত থেকে লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযোগকারী খালটিতে জাহাজ চলাচল আবার শুরু হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

২৩ মার্চ সকালে মিশরের স্থানীয় সময় সকালে ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৫৯ মিটার প্রশস্ত ও দুই লাখ ২০ হাজার টন কন্টেইনার বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ এভার গিভেন প্রবল বাতাস ও ধুলি ঝড়ের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে গিয়ে সুয়েজ খালের দক্ষিণাংশের সংকীর্ণ একক লেনে আড়াআড়িভাবে আটকে যায়, এতে গুরুত্বপূর্ণ জলপথটিতে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ধূলিঝড় তখন দৃষ্টিসীমাকেও বাধাগ্রস্ত করেছিল বলে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়।

এ কারণে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় দুই প্রান্ত বহু জাহাজ আটকা পড়ে। সোমবার সকালে উদ্ধারকারী টাগবোটগুলো এভার গিভেনকে পাড়ের চড়া থেকে নামিয়ে ফের ভাসাতে সক্ষম হলে অচলাবস্থার অবসান হয়।

সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের (এসসিএ) চেয়ারম্যান ওসামা রাবি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে খালটি দিয়ে মোট ১১৩টি জাহাজ পারাপার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

দুই পাশে আটকা পড়া ৪২২টি জাহাজ আগামী তিন থেকে সাড়ে তিন দিনের মধ্যে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হতে পারবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জাহাজ চলাচল পথ সুয়েজ খাল। ১৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই জলপথে তিনটি প্রাকৃতিক হ্রদ আছে। 

এভার গিভেনকে ভাড়া নেওয়া তাইওয়ানের এভারগ্রিন লাইন কোম্পানি জানিয়েছে, জাহাজটিকে সুয়েজ খালের মধ্যবর্তী গ্রেট বিটার হ্রদে নিয়ে গিয়ে এটি সাগরে চলাচলের মতো অবস্থায় আছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হবে।

এ বিষয়ে ওসামা রাবি বলেছেন, “প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, জাহাজটি কিছুদূর যাওয়ার মতো তৈরি অবস্থায় আছে আর এর একটি কন্টেইনারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, কিন্তু দ্বিতীয়বার যাচাই করলে বিষয়টি আরও সুনির্দিষ্ট হবে আর এর কোনো ক্ষতি হয়ে থাকলে তা ধরা পড়বে।”

সুয়েজ খাল পার হওয়ার জন্য যেসব জাহাজ অপেক্ষা করে আছে সেগুলোর মধ্যে কন্টেইনারবাহী জাহাজ, শস্যবাহী বাল্ক ক্যারিয়ার, তেলবাহী ট্যাংকার ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বা তরল পেট্রলিয়াম গ্যাসবাহী (এলপিজি) জাহাজ আছে বলে নাইল টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

চার দিনের মধ্যে খালটিতে জাহাজ চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে রাবি জানিয়েছেন।

“জাহাজটের অবসান ঘটাতে রাতদিন কাজ করবো আমরা,” বলেছেন তিনি।

এভার গিভেনের মতো বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কন্টেইনার জাহাজগুলো নিরাপদে সুয়েজ খাল পার হতে পারবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। এসসিএ এ ধরনের জাহাজগুলোকে খাল পার হওয়ার অনুমতি দেওয়ার নীতি পরিবর্তন করবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।