ভারত থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রপ্তানি ‘সাময়িকভাবে স্থগিত’

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে ভারত সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার রপ্তানি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বলে খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2021, 04:25 AM
Updated : 25 March 2021, 06:49 AM

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে, সামনের দিনগুলোতে টিকার চাহিদাও বাড়বে। ফলে ভারতের নিজেরই ওই টিকা লাগবে। 

কর্মকর্তারা বলছেন, এটি একটি সাময়িক পদক্ষেপ। এর ফলে টিকার রপ্তানি আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে। কোভ্যাক্সের আওতায় যে ১৮০টি দেশ টিকা পাওয়ার কথা, তাদের ক্ষেত্রে ভারতের এ সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে।

টিকার ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্যাভির নেতৃত্বে কোভ্যাক্স নামের এই আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কাজ করছে। 

রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদক সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়া এ পর্যন্ত ৭৬টি দেশে মোট ৬ কোটি ৫০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৭৭ লাখ ডোজ পেয়েছে কোভ্যাক্স।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে কোনো টিকার চালান বিদেশে পাঠানো হয়নি।

কোভ্যাক্সের টিকা ক্রয় ও বিতরণে যুক্ত থাকা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ রয়টার্সের প্রশ্নের উত্তরে এক ইমেইলে জানিয়েছে, মার্চ ও এপ্রিলে স্বল্প আয়ের দেশগুলোর জন্য যে টিকার চালান সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে পাঠানোর কথা ছিল, তার রপ্তানির অনুমোদন না মেলায় সরবরাহ বিলম্বিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

“যত দ্রুত সম্ভব টিকার সরবরাহ যাতে পাওয়া যায়, সেজন্য ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে কোভ্যাক্স,” বলেছে ইউনিসেফ।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্য, ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশেও সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকা সরবরাহ বিলম্বিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

কেন এ পদক্ষেপ?

বিবিসি লিখেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় ভারত সরকার টিকা রপ্তানি আপাতত স্থগিত রাখার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।  

বুধবার দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ দিন ৪৭ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২৭৫ জনের।  

টিকাদান কর্মসূচির সম্প্রসারণে ভারত ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদেরও টিকার আওতায় আনছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই টিকার চাহিদা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, “এটা সাময়িক পদক্ষেপ। অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।”

কর্মকর্তারা বলেছেন, এপ্রিল পর্যন্ত টিকা সরবরাহ সীমিত থাকতে পারে, তবে মে নাগাদ আরও অন্তত একটি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেতে পারে; তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।

তবে এ বিষয়ে ভারত সরকারের বা সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি এখনও আসেনি।