কোভিড নিয়ে দেশবাসীকে ‘ঘ্যানঘ্যানানি বন্ধ’ করতে বললেন বোলসোনারো

ব্রাজিলে কোভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো দেশবাসীকে এ রোগ নিয়ে ‘ঘ্যানঘ্যানানি বন্ধ করতে’ বলেছেন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2021, 06:12 PM
Updated : 5 March 2021, 06:12 PM

বিবিসি জানায়, দেশটিতে এ রোগের সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়ই আবার বাড়তে শুরু করেছে।

কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে ব্রাজিল। সেখানে দুই লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ‍মারা গেছেন বলে জানায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবারও সেখানে ১ ‍হাজার ৬৯৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আগের দিন মারা যান ১ হাজার ৯১০ জন।

ব্রাজিলে বৃহস্পতিবার ৭৫ হাজার ১০২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। যা দেশটিতে দৈনিক শনাক্তের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড।

ব্রাজিল এখনো মহামারীর সবথেকে খারাপ সময় পার করছে। দেশটির হাসপাতালগুলো কোভিড আক্রান্ত রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।

কেন্দ্র থেকে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কয়েকটি বড় বড় নগরী এবং রাজ্য নিজেরাই ‍নানা বিধি নিষেধ আরোপ করেছে।

ব্রাজিলে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে ভাইরাসের অধিক সংক্রামক নতুন ধরন। অ্যামাজনের মানাউস নগরীতে ভাইরাসের নতুন ওই ধরনটি সবার আগে শনাক্ত হয়। যা এখন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আবারও সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে ভাইরাসের নতুন এই ধরনকেই দায়ী মনে করা হচ্ছে।

দেশের এই যখন অবস্থা তখনও মহামারীর হুমকিকে আগের মতই অবজ্ঞা করে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো।

বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘ঘ্যানঘ্যানানি বন্ধ করুন। এটা নিয়ে আপনারা আর কতদিন কান্নাকাটি চালিয়ে যাবেন?

‘‘আর কতদিন আপনারা বাড়িতে থাকবেন এবং সবকিছু বন্ধ রাখবেন? কারো পক্ষে এটা আর মেনে নেওয়া সম্ভব না। এ রোগে যাদের প্রাণ গেছে ‍তাদের জন্য আবারও সমবেদনা। কিন্তু আমাদের একটি সমাধান প্রয়োজন।”

বোলসোনারোর এ মন্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

সাও পাওলোর গভর্নর জোয়াও ডোরিয়া প্রেসিডেন্টকে ‘পাগল’ বলেছেন।

মহামারী নিয়ন্ত্রণে বোলসোনারোর গ্রহণ করা ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘‘গভর্নর এবং মেয়রা মহামারীর অবসানে টিকা কিনে দেশকে সাহায্য করতে চান। তিনি কিনা পাগলের মত তাদের উপরই আক্রমণ করে বসলেন।

‘‘কিভাবে আমরা এ সংকট মোকাবেলা করবো, প্রতিদিন লোকজনকে মরতে দেখে? ব্রাজিলের স্বাস্থ্যখাত ধসে পড়ার মুখে।”

বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নররা ভাইরাসের বিস্তার রোধে লোকজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখার কথা বললেও বোলসোনারো ক্রমাগত তার বিরোধিতা করে যাচ্ছেন। তার যুক্তি, এতে অর্থনীতির যে ক্ষতি হবে তা ‘ভাইরাসের ক্ষতির চেয়ে মারাত্মক হবে’।

ক্ষুব্ধ ডোরিয়া বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্রাজিলকে এই মুহূর্তে দুইটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। একটি করোনাভাইরাস, অন্যটি বোলসোনারো ভাইরাস। ব্রাজিলের জনগণের জন্য এটা একটি দুঃখগাথা।”