খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরপরই ওয়াশিংটনের রিয়াদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নিল।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক খুনে দায়ী করা হলেও শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি তার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে যেন কাজের সম্পর্ক বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করতেই তার ওপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হচ্ছে সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন, ফাটল ধরানো নয়।
গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন; তারই ধারাবাহিকতায় খাশুগজি হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ এবং সৌদি নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞার এসব পদক্ষেপ এল বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের।
বাইডেনের আগের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদক দেশ সৌদি আরবের একের পর এক মানবাধিকার লংঘনকে ছাড় দিয়ে গিয়েছিল বলে সমালোচকরা অভিযোগ করে আসছেন।
২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটের ভেতর ৫৯ বছর বয়সী সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে সৌদি এজেন্টরা হত্যা করে এবং তার লাশ গুম করে ফেলে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্সই এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করে এলেও মোহাম্মদ বিন সালমান শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় খাশুগজি খুনের ঘটনায় সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক উপপ্রধান আহমেদ আল-আসিরি এবং সৌদি রয়েল গার্ডস র্যাপিড ইন্টারভেনশন ফোর্সের (রিফ) ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে রিফের ভূমিকার বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসেছে।
“জামাল খাশুগজিকে নির্মমভাবে হত্যায় জড়িতদের অবশ্যই জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে,” বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন।
যুক্তরাষ্ট্র পরে ৭৬ সৌদি নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞাও জারি করে। সীমানার বাইরে সাংবাদিক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা দেশগুলোকে শায়েস্তা করতে বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া নতুন নীতির আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কেবল যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তারাই নন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও এই বিধিনিষেধের প্রয়োগ দেখা যেতে পারে।