কোভিড-১৯: আদালত কারফিউ তুলতে বলায় সংকটে নেদারল্যান্ডস

করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখতে নেদারল্যান্ডসে জারি করা রাত্রিকালীন কারফিউ তুলে নিতে বলেছে হেগের একটি আদালত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2021, 07:04 PM
Updated : 17 Feb 2021, 02:37 AM

এর মধ্য দিয়ে নাগরিকদের স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে আদালতের আদেশে বলা হয়েছে।

আদালত বলেছে, জরুরি আইনের আওতায় রাত ৯টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে, যখন ‘গুরুতর জরুরি পরিস্থিতি’ নেই।  

আদালতের এই সিদ্ধান্তকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আরোপিত বিধি-নিষেধের বিরুদ্ধে সরব ভাইরাসওয়ারহেইড (ভাইরাস ট্রুথ) নামের ক্যাম্পেইন গ্রুপের বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ডাচ সরকার কারফিউ প্রত্যাহার ঠেকাতে এখনও কিছু করতে না পারলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট জনগণের প্রতি তা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।

কারফিউ প্রত্যাহারের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার। তার আগে আদালতের প্রতি ওই সিদ্ধান্ত স্থগিতের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আদালত তাতে সাড়া না দিলে মঙ্গলবার রাত থেকে কারফিউ তোলা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।

আদালতের আদেশকে একটি ধাক্কা হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী রুট বলেছেন, “কারফিউ প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনার মতো এক সেকেন্ড সময়ও আমাদের নেই। কারণ এটা নেহাতই দরকার।” 

বিবিসি বলছে, কারফিউ বলবৎ রাখতে ডাচ মন্ত্রিসভা নতুন আইন নিয়ে কাজ করছে। তবে এজন্য সময় লাগতে পারে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানুষের চলাচল সীমিত করার জন্য ব্যাপকভাবে কারফিউ জারি করা হয়। ফ্রান্সেও সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাতে কারফিউ ছিল, সম্প্রতি তৃতীয় দফা লকডাউন দেওয়ার পর তা তুলে নেওয়া হয়। স্পেন ও ইতালিতে কারফিউ রয়েছে, গ্রিসও একই পথে হেঁটেছে।

কারফিউ অব্যাহত যে কারণে

নেদারল্যান্ডসে গত ২৩ জানুয়ারি থেকে রাতের কারফিউ জারি করা হয় নাগরিকদের চলাচল সীমিত করার লক্ষ্যে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের। তবে এই বিধি-নিষেধের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ দেখা দেয়, তা রূপ নেয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ চলাকালে নাৎসি অধিকৃত হওয়ার পর নেদারল্যান্ডসে আর কখনও কারফিউ জারি করা হয়নি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিকে নেদারল্যান্ডস কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকলেও গত ডিসেম্বরে লকডাউন দেওয়া হয়। জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভা রাতে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত নিলে দেশটির এমপিরা তাতে সায় দেন। যুক্তরাজ্যে দেখা দেওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে তাদের মধ্যে। গত মাসে কারফিউয়ের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছে সরকার, আগামী মাসের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ‘কেয়ারটেকারের’ ভূমিকায় আছে তারা।

কারফিউ তুলে নেওয়ার আদেশের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বিচারকরা বলেছেন, গত বছর যখন করোনাভাইরাস আক্রান্তদের ভিড়ে হাসপাতালগুলো অনেক বেশি চাপে ছিল তখনও কারফিউ না থাকায় এখন যুক্তরাজ্যে দেখা দেওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা ‍যুক্তিসঙ্গত নয়।

“কারফিউ সে কারণে চলাচলের স্বাধীনতার অধিকার ও প্রাইভেসির লংঘন এবং তা মানুষের একত্রিত হওয়ার অধিকারকে খর্ব করছে।”