নির্বাচন হবেই: প্রতিশ্রুতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকতে নয় বরং নতুন নির্বাচনের আয়োজন করে বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই তাদের লক্ষ্য বলে মঙ্গলবার দাবি করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2021, 05:09 PM
Updated : 16 Feb 2021, 05:24 PM

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জও মিন তুন বলেন, ‘‘আমাদের মূললক্ষ্য একটি নির্বাচনের আয়োজন করা এবং বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ক্ষমতা আঁকড়ে থাকবে না।

‘‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি....নির্বাচন হবেই।”

তবে কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য তিনি দেননি। গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে উৎখাতের পর এটাই সেনাবাহিনীর প্রথম সংবাদ সম্মেলন। অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী দেশজুড়ে এক বছরের জুরুরি অবস্থা জারি করেছে।

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সেনাবাহিনীর এই সংবাদ সম্মেলন চলে। যা ফেসবুক লাইভে সম্প্রচার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এনএলডি নেতা অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টকে আটকে রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে ব্রিগেডিয়ার তুন বলেন, ‘‘তাদের আটকে রাখা হয়নি। বরং বিশৃঙ্খল এ সময়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে রাখা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের বৈদেশিক নীতিতেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সেটি এখনো আগের মতই আছে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির দ্বার খোলা আছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর সু চির মু্ক্তি এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে মিয়ানমারে টানা কয়েকদিন ধরে গণবিক্ষোভ চলছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আশা তাদের নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি হয়তো বিক্ষোভকারীদের সন্তুষ্ট করবে এবং তারা আন্দোলন বন্ধ করবেন।

মিয়ানমারের এবারের আন্দোলন দেশটিতে ২০১১ সালে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের স্মৃতিকে ফিরিয়ে এনেছে। সেবার ওই গণবিক্ষোভের চাপেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দেশটির ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার এবং গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।

যদিও এবারের আন্দোলন ২০১১’র আন্দোলনের তুলনায় এখন পর্যন্ত কম রক্তক্ষয়ী। তবে রক্ত যে একেবারে ঝরেনি তা কিন্তু নয়। মঙ্গলবারও নানা জায়গায় বিক্ষোভেকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ কয়েকদফা গুলি ছুড়েছে। যদিও বেশিরভাগ জায়গাতেই রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। এদিন ছয় বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

এর আগে রাজধানী নেপিডোতে বিক্ষোভের সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ নারীর বেঁচে ফেরার আশা কম বলে জানায় বিবিসি। সংবাদ সম্মেলনে ব্রিগেডিয়ার তুন বলেন, বিক্ষোভে আহত এক পুলিশও মারা গেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা ধৈর্য সহকারে ‍অপেক্ষা করছি। প্রয়োজন হলে আমরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”