অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে বিরোধ, টিকা রপ্তানিতে কঠোর হতে পারে ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সতর্ক করে বলেছে, তারা করোনাভাইরাস টিকা রপ্তানির বিধি কঠোর করতে পারে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2021, 04:21 AM
Updated : 26 Jan 2021, 06:33 AM

পরিকল্পনা অনুযায়ী যে পরিমাণ টিকা ২৭-সদস্য দেশের ব্লকটিতে (ইইউ) সরবরাহ করার কথা, তাতে কাটছাঁট করা নিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে বিরোধের জেরে ইইউ এমন মনোভাব প্রকাশ করেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

ব্লকটির স্বাস্থ্য কমিশনার স্টেলা কেরিয়াকিডিস জানিয়েছেন, “নিজের নাগরিকদের সুরক্ষার প্রয়োজনে যেকোনো পদক্ষেপ নেবে ইইউ।”

গত সপ্তাহে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইইউকে জানিয়েছে, উৎপাদন সমস্যার জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে পারছে না তারা। 

সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ হয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ওই ক্রয়াদেশ দিয়েছিল ইইউ, কিন্তু টিকা বিতরণে ধীর গতির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে তারা।

ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা সরবরাহেও ঘাটতি তৈরি হওয়ায় ইইউয়ের কিছু সদস্য দেশে টিকাদান কর্মসূচীর গতি কমে গেছে, এই কারণে কিছু দেশ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।

এই পরিস্থিতির জেরে যুক্তরাজ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের উৎপাদিত টিকার সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। ফাইজার যুক্তরাষ্ট্রের ও বায়োএনটেক জার্মানির কোম্পানি। ফাইজারের বেলজিয়াম প্লান্ট যুক্তরাজ্যে টিকা সরবরাহ করছে।

টিকা সরবরাহকারীদের সঙ্গে তারা ‘নিবিড় যোগাযোগ’ রক্ষা করে চলছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।

গত সপ্তাহে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছিল, তাদের উৎপাদনে সমস্যা হওয়ায় ইইউয়ের সদস্য দেশগুলোকে প্রাথমিকভাবে যে পরিমাণ ডোজ দেওয়ার কথা ছিল তার চেয়ে কম দিতে হবে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মার্চের মধ্যে ইইউকে আট কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

সরবরাহে কী পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হবে তা নিয়ে কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সরবরাহ হ্রাস পেয়ে তিন কোটি ১০ লাখে দাঁড়াতে পারে। 

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এখন পর্যন্ত ইইউয়ের ‍ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা দ্য ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সির (ইএমএ) অনুমোদন পায়নি, কিন্তু চলতি মাসের শেষ দিকেই এটি সবুজ সংকেত পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এক টুইটে কেরিয়াকিডিস জানিয়েছেন, সোমবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যে আলাপ হয়েছে ‘ব্যাখ্যার ঘাটতি ও স্বচ্ছতার অভাবের কারণে’ তা অসন্তুষ্টি তৈরি করেছে।

“ইইউয়ের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ঐক্যবদ্ধ: টিকা উৎপাদনকারীদের সামাজিক ও চুক্তিবিষয়ক দায়বদ্ধতা রয়েছে যা তাদের বজায় রাখা উচিত,” বলেছেন তিনি।  

বুধবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে পরবর্তী বৈঠক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটিকে টিকা সরবরাহের বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা দেওয়ার অনুরোধ করেছে ইইউ।

এই স্বাস্থ্য কমিশনার সতর্ক করে বলেন, “ভবিষ্যতে, ইইউয়ে কোভিড-১৯ এর টিকা উৎপাদকারী সকল কোম্পানিকে কখন তারা তৃতীয় দেশগুলোর কাছে রপ্তানি করতে চায় তা আগেই জানাতে হবে।”

এসব বিষয় নিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।