কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এ বছর তার অনেক কিছুই বাদ দিতে হচ্ছে। শপথ অনুষ্ঠানে কখন কী হতে চলেছে তার বিস্তারিত খুঁটিনাটি তুলে ধরেছে বিবিসি:
শপথ অনুষ্ঠান কী?
আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ বাক্য পাঠ করার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক হয়। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি তে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শপথ বাক্য পাঠ করার পর ডেমোক্র্যাটিক নেতা জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আসন গ্রহণ করবেন এবং তার অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। যদিও শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর দিনভর আরও নানা আয়োজন চলতে থাকবে।
বাইডেনের শপথ বাক্য পাঠ করার ঠিক আগে কমলা হ্যারিস নিজের শপথ বাক্য পাঠ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
কখন শপথ অনুষ্ঠান হবে?
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক হবে। সাধারণত স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টা (১৬:৩০ জিএমটি এবং বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত সাড়ে ১০টায়) অনুষ্ঠান শুরু হয়।
দিনের মধ্যভাগে বাইডেন ও হ্যারিস শপথ বাক্য পাঠ করবেন। দিনের শেষ ভাগে হোয়াইট হাউজে যাবেন বাইডেন। আগামী চার বছরের জন্য সেটাই তার বাড়ি হবে।
সাধারণত প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা আয়োজন থাকে। গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে দাঙ্গার পর এবার নিরাপত্তা আয়োজন আরও জোরদার করা হয়েছে।
অভিষেকের আগেই পুরো নগরী নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। নগরীর অনেক এলাকায় সর্বসাধারণের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
দেশটির সিক্রেট সার্ভিস অভিষেক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে। হাজার হাজার পুলিশের পাশপাশি ১৫ হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতয়েন করা হয়েছে।
ক্যাপিটলে দাঙ্গার পরপরই ওয়াশিংটন ডিসিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। যা বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানের পরও কয়েকদিন জারি থাকবে।
ট্রাম্প থাকবেন?
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন এটাই প্রথা। কিন্ত এ বছর এ প্রথার ব্যতিক্রম হচ্ছে।
গত ৮ জানুয়ারি এক টুইটে ট্রাম্প জানিয়েছে দিয়েছেন, তিনি বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে থাকবেন না। অভিষেক অনুষ্ঠানের দিন ট্রাম্প ফ্লোরিডায় যাবেন।
সাধারণত নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের দিন ওয়াশিংটন ডিসি লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। সারা দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজধানীতে আসেন।
ন্যাশনাল মলে মানুষের ভিড় জমে যায়। হোটেলগুলো অতিথিতে পূর্ণ থাকে। জনগণকে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২০০৯ সালে তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অভিষেকে ২০ লাখ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু এবার জনগণকে উল্টা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, রাজধানীতে না এসে বাড়িতে বসেই ভার্চুয়ালি প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান দেখতে।
এবার প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে মাত্র এক হাজার টিকিট ছাড়া হয়েছে। সেগুলোও পাওয়া যাচ্ছে শুধু সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যদের মাধ্যমে। অন্যান্য বার দুই লাখের বেশি টিকেট ছাড়া হত।
শপথ অনুষ্ঠানের পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট এবং নতুন ভাইস প্রেসিডেন্টকে তাদের পরিবারসহ হোয়াইট হাউজে নিয়ে যান। কিন্তু এবার সেটা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। বরং হোয়াইট হাউসে যাওয়ার মিছিলটি হবে ভার্চুয়ালি।
নতুন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির সম্মানে হোয়াইট হাউজে যে জাঁকজমকপূর্ণ পার্টির আয়োজন করা হয় এবার সেটাও হচ্ছে না। কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও বাদ পড়েছে।
তারকারা কি থাকছেন?
গত কয়েক বছরে প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে দেশের নামিদামী তারকারা গান-নাচ পরিবেশন করেন। মহামারীর সময় হলেও এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৯০ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন দুইবার অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেতা টম হ্যাংকস।