সোমবার পুলিশ স্টেশনে আদালত বসিয়ে তাকে এই আটকাদেশ দেওয়া হয়। নাভালনি এই আদালতকে ‘উপহাস’ অভিহিত করে সমর্থকদেরকে বিক্ষোভে নামার ডাক দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিয়ে রোববার জার্মানি থেকে নিজ দেশ রাশিয়ায় ফিরে মস্কো বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই আটক হন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত নেতা নাভালনি।
এর পর ২৪ ঘন্টা না পেরোতেই মস্কোর উপকণ্ঠে খিমকির একটি পুলিশ স্টেশনে আদালত বসিয়ে একদিনের শুনানি আয়োজন করা হয়। ওই স্টেশনেই রাতভর আটকে রাখা হয়েছিল নাভালনিকে।
তাকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেওয়ার আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেই সোমবার সেখানে শুনানি চলে। বিচারক প্যারোলের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে নাভালনিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আটক রাখার আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
২৯ জানুয়ারিতে আরেকটি শুনানিতে হাজির হতে হবে নাভালনিকে। তার সাড়ে তিনবছরের স্থগিত দণ্ডের জায়গায় জেল কার্যকর করা হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এই শুনানিতে।
নাভালনি সোমবার বলেছেন, তার সঙ্গে বিচারের নামে ‘উপহাস’ এবং ‘চরম অনাচার’ করা হচ্ছে। শুনানির পর প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে নাভালনি তার সমর্থকদেরকে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামার ডাক দেন।
৪৪ বছর বয়সী নাভলনি গত বছর অগাস্টে একটি অভ্যন্তরীন ফ্লাইটে সার্বিয়া থেকে মস্কো ফেরার সময় এককাপ চা পানের পরই অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন। বিমানবন্দর থেকে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অবস্থার পরিবর্তন না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জার্মানি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পরীক্ষায় জানায় যায়, সোভিয়েত আমলে তৈরি বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট নোভিচক দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
নাভালনি ও তার সমর্থকদের অভিযোগ, রুশ সরকার বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই তাকে রাসায়নিক বিষ প্রয়োগে মারার চেষ্টা করা হয়।
অবশ্য ক্রেমলিন ওই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে। পুতিন বলেছেন, যদি রুশ এজেন্টরা তাকে হত্যা করতেই চাইত, তবে ‘তারা অবশ্যই তাদের কাজ শেষ করত’।
বার্লিনের একটি হাসপাতালে দীর্ঘদিনের চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন নাভালনি। তার স্বাস্থ্যও প্রায় আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। এরপরই গত বুধবার নিজের ইন্সটাগ্রামে এক পোস্টে রাশিয়ায় ফেরা এবং পুনরায় রাজনীতি শুরুর কথা জানানোর পর রোববার দেশে ফেরেন এই নেতা।