গত বৃহস্পতিবার উগান্ডায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হয়। এ নির্বাচনে ৩৫ বছর ধরে ক্ষতায় থাকা মুসেবেনিই জয় পেয়েছেন।
তবে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক পপ তারকা ববি ওয়াইন নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভোটে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন তিনি।
একইসঙ্গে ওয়াইন বলেন, ‘‘আমি আমার এবং আমার স্ত্রীর জীবন নিয়েও শঙ্কায় আছি।”
‘‘আমাদেরকে এমনকী আমাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তা বাহিনী পুরো বাড়ি ঘিরে রেখেছে। কেউ আমাদের বাড়িতে ঢুকতে বা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও আমার বাড়িতে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”
তবে সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, ববি ওয়াইন যেভাবে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিচ্ছেন সেরকম কিছু হয়নি। অন্যদিকে, মুসেবেনির দাবি, উগান্ডায় এবারের মতো এতটা স্বচ্ছ নির্বাচন অতীতে কখনও হয়নি।
‘‘বিদেশি হস্তক্ষেপ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। আমরা চাই না বিদেশিরা আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে নাকগলাক। যদি বিদেশি হস্তক্ষেপ সম্পদ অর্জনের রাস্তা হত, তবে আফ্রিকা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে পরিণত হত।”
তবে মুসেবেনি যতই দাবি করুন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ভোটের পর থেকেই রাজধানী কামপালাসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যরাও টহল দিচ্ছে।
১৯৮৬ সাল থেকে আফ্রিকার দেশ উগান্ডার ক্ষমতায় আছেন সাবেক গেরিলা কমান্ডার মুসেবেনি। ২০১৯ সালে সংবিধান সংশোধন করে ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেন তিনি৷
অন্যদিকে, পপ গায়ক থেকে রাজনীতিতে নামা ওয়াইন ২০১৭ সালে প্রথম দেশটির এমপি নির্বাচিত হন৷ তিনি মাঝে মধ্যেই মুসেবেনিকে ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, মুসেবেনি উগান্ডার তরুণদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।
এবার নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই উগান্ডাজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। গত নভেম্বরে ববি ওয়াইন গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে তার সমর্থকদের সংঘর্ষে সারা দেশে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়।
বৃহস্পতিবার ভোটের দিনও উগান্ডার বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ ভোটের আগের দিন উগান্ডা সরকার দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, ইন্টারনেট–সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোটের ওপর আস্থা নষ্ট হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় উগান্ডা সরকারের একজন মন্ত্রী বিবিসি-কে বলেছেন, ‘দ্রুতই’ ইন্টারনেট সেবা আবার চালু হবে।