কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ: জাপানে আত্মহত্যা বেড়েছে ১৬ শতাংশ

জাপানে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রথম ঢেউয়ের সময় আত্মহত্যার হার কমলেও দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে তা একলাফে বেড়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গেছে।

>>রয়টার্স
Published : 17 Jan 2021, 04:10 PM
Updated : 17 Jan 2021, 04:10 PM

‘হংকং ইউনিভার্সিটি’ এবং ‘টোকিও মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট অব জিরন্টোলোজি’ গবেষকদের পরিচালিত এক জরিপের ফলে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

জরিপ থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে জাপানিদের আত্মহত্যার হার ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে।

অথচ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসেই আত্মহত্যার হার ১৪ শতাংশে নেমে এসেছিল।

গত শুক্রবার এ জরিপ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘দ্য জার্নাল ন্যাচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’। এতে বলা হয়েছে, “স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় মহামারীর সময়কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জাপানে শিশু, কিশোর এবং নারীদের (বিশেষত গৃহিনী) মানসিক স্বাস্থ্যে অনেক বেশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।”

তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঢেউ চলাকালে সরকারি প্রণোদনা, কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা কমেছিল।

কিন্তু মহামারী দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেওয়ায় শিল্প-কারখানার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে জাপানে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে; যা পুরুষদের আত্মহত্যার প্রবণতার তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।

তাছাড়া, কর্মজীবী নারীদের দুর্ভোগ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ার কারণেও আত্মত্যার হার বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে, জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে জাপানে শিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ৪৯ শতাংশ বেড়েছে।

দেশব্যাপী স্কুল বন্ধ থাকার সময়টিতেই শিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার এই হার পরিলক্ষিত হয়েছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এ মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় রাজধানী টোকিওসহ তিনটি প্রশাসনিক এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করেন। এখন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই জরুরি অবস্থার পরিধি এ সপ্তাহে ওসাকা এবং কিয়োটো পর্যন্ত বাড়িয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে জাপানের প্রশাসনিক সংস্কার মন্ত্রী তারো কানো বলেছেন, সরকার জরুরি অবস্থা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করলেও তাতে অর্থনীতির যেন মৃত্যু না ঘটে।

তিনি বলেন, “মানুষ কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু অনেক মানুষ চাকরি হারানো, আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া, কোনও আশা দেখতে না পাওয়ার কারণেও আত্মহত্যা করেছে। তাই আমাদের কোভিড-১৯ মোকাবেলা এবং অর্থনীতি সামাল দেওয়ার মধ্যে ভারসাম্য রাক্ষা করা প্রয়োজন।”