শুক্রবারের ৬ দশমিক ২ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু এবং কয়েকশত লোক আহত হয়েছেন, আতঙ্কিত হাজার হাজার বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শনিবার পশ্চিম সুলাওয়েসি প্রদেশের মামুজু ও মাজেনে জেলায় ৫ মাত্রার একটি পরাঘাত হয়েছে, তবে এতে নতুন করে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা।
সংস্থার প্রধান ডোনি মোনার্ডো স্থানীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত লোকজন আটকা পড়ে থাকতে পারে, তাদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত আছে।
উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য প্রদেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল বলে সংস্থাটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ভূমিকম্পে ৮২০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন এবং ভূমিকম্পের পর প্রায় ১৫ হাজার লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে গেছেন বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অনেকে পর্বতগুলোতে আশ্রয়ে নিয়েছেন আর বাকিরা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে উঠেছেন।
শুক্রবারের সাত সেকেন্ড স্থায়ী ওই ভূমিকম্প এবং বেশ কয়েকটি পরাঘাতে ৪০০ ঘরবাড়ি, দু’টি হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধসে পড়ে একটি হাসপাতাল এবং প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয়।
এই হাসপাতাল ও গভর্নর কার্যালয়ের ধ্বংস্তূপের নিচে এখনও বেশ কয়েকজন চাপা পড়ে আছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নূর সামসিয়া জানিয়েছেন, তার ছেলে ওই হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন, সে মারা গেছে।
“আমার ছেলে ভবনটির নিচের তলায় ছিল, সে দৌঁড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারেনি,” বলেন তিনি।
তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থার কর্মকর্তা আরিয়েন্তো আর্দি মামুজুতে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তল্লাশি প্রচেষ্টার মূল মনোযোগ থাকবে ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল দুটিতে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থার প্রধান দ্বিকোরিতা কার্নাওয়াতি শনিবার স্থানীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, আরেকটি ভূমিকম্প হতে পারে এবং সেটি ৭ মাত্রা পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। সুনামি ঝুঁকির কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাগর থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সংস্থাটির দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পটি ১৯৬৯ সালে হওয়া আরেকটি ভূমিকম্পের মতোই ছিল, তখন সুনামি হয়েছিল আর তাতে ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রশান্ত মহাসাগরের কথিত ‘রিং অব ফায়ার’ (প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা) এর উপর ছড়িয়ে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়।
২০১৮ সালে সুলাওয়েসির পালু শহরে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের পরও সুনামি সৃষ্টি হয়েছিল। ওই ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: