যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে লাগবে কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ

যুক্তরাষ্ট্রে যেতে হলে লাগবে কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ বা করোনাভাইরাস সংক্রমণ মুক্ত থাকা কিংবা সেরে ওঠার প্রমাণ। আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2021, 02:37 PM
Updated : 13 Jan 2021, 02:37 PM

এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে থাকা সব বিদেশি যাত্রীকেই বিমানে ওঠার আগে প্রথমে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ ফলের প্রমাণ দেখাতে হবে।

এর আগে কেবল যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া যাত্রীদের জন্য কোভিড ‘নেগেটিভ’ সনদ দেখানোর নিয়ম চালু করেছিল ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এবং ডেলটা এয়ারলাইন্স।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের অতি- সংক্রামক ধরন শনাক্তের পর ওই দেশ থেকে যাওয়া ভ্রমণকারীদের জন্য এ নিয়ম করে যুক্তরাষ্ট্র। গত ডিসেম্বরে সেটি কার্যকর হয়। ওই আদেশই আরও বিস্তারিত করে এখন সবার জন্য কোভিড-১৯ ‘নেগেটিভ’ সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ সেন্টার (সিডিসি) থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আকাশপথে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য এখন সব যাত্রীকেই, এমনকী তারা টিকা নিয়ে থাকলেও, ফ্লাইটে উঠার আগে তিনদিনের মধ্যে করানোভাইরাস পরীক্ষা করাতে হবে এবং ওই পরীক্ষার ফলের লিখিত ডকুমেন্ট দিতে হবে কিংবা কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠার প্রমাণ দেখাতে হবে।

সিডিসি’র ‍মুখপাত্র জেসন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “কেবল টিকা নেওয়ার প্রমাণই যথেষ্ট নয়। কারণ, টিকা কেবল মারাত্মক অসুস্থতা থেকে সুরক্ষার ক্ষেত্রেই কার্যকর দেখা গেছে। টিকা নেওয়ার পরও মানুষ আক্রান্ত হতে পারে এবং সেকারণে ফ্লাইটে অন্যরা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আছে।”

সিডিসি জানিয়েছে, এয়ারলাইন্সকে সব যাত্রীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার নেগেটিভ ফল কিংবা তাদের সেরে ওঠার প্রমাণ বিমানে ওঠার আগেই নিশ্চিত করতে হবে। তাই কোনও যাত্রী এইসব প্রমাণ না দিলে কিংবা নিয়মমাফিক করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করালে তাকে বিমানে উঠতে দেওয়া হবে না।

সিডিসি থেকে ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশের পর তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে আরও একবার কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও, অন্তত সাত দিন বাড়িতে সবার থেকে আলাদাভাবে অবস্থান করতে বলেছে।

সিডিসির পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড বলেন, ‘‘শুধু কোভিড পরীক্ষা করিয়ে সব ঝুঁকি থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। কিন্তু যখন তার সঙ্গে লোকজন যথা নিয়মে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকবেন এবং মাস্ক পরাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো প্রতিদিনের প্রতিরোধ ব্যবস্থার নিয়মিত চর্চা করবেন তখনই কেবল ভ্রমণ নিরাপদ হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি আরও কয়েকটি দেশে শনাক্ত হয়েছে। নতুন এই ধরনটি মূল ভাইরাস থেকে ৭০ শতাংশ দ্রুত রোগ ছড়াতে সক্ষম।

কোভিড-১৯ মহামারীতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখা দেশ যুক্তরাষ্ট্র আরও দ্রুত সংক্রামক ওই ভাইরাসের ধরনটির প্রবেশ আটকাতে চাইছে। যদিও বেশ কয়েকজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ভাইরাসটি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৭৯ হাজারের বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সেখানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।

এদিকে, করোনভাইরাসের নতুন আরও একটি ধরন নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ব্রাজিলের অ্যামাজন থেকে যাওয়া চার ভ্রমণকারীর দেহে নতুন এই ধরনটি খুঁজে পায় জাপান।

ওই ভ্রমণকারীদের আলাদা করে রেখে ভাইরাসের ধরনটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার জানায় জাপান।