৬২ আরোহী নিয়ে ইন্দোনেশীয় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত

ইন্দোনেশিয়ার শ্রীবিজয়া এয়ারের একটি উড়োজাহাজ ৬২ জন আরোহী নিয়ে জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের পরপরই সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2021, 11:17 AM
Updated : 10 Jan 2021, 10:14 AM

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায় জাকার্তা থেকে যাত্রী নিয়ে ওয়েস্ট কালিমান্তান প্রদেশের রাজধানী পনতিয়ানাকের উদ্দেশে রওনা হয় বোয়িং ৭৩৭-৫০০ উড়োজাহাজটি।

প্রবল বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর রওনা হয়েছিল উড়োজাহাজটি। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই ফ্লাইট এসজে ১৮২ এর সঙ্গে কন্ট্রোল টাওয়ারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী বুদি কারিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিমানবন্দর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লাকি দ্বীপের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয় শ্রীবিজয়ার উড়োজাহাজটি।

ওই ডমেস্টিক ফ্লাইটে ১২জন ক্রুসহ মোট ৬২ জন আরোহী ছিলেন, তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানা যায়নি। তাদের সবাই ইন্দোনেশীয় নাগরিক বলে দেশটির ট্রান্সপোর্ট সেইফটি কমিটি জানিয়েছে।

উদ্ধারকারী সংস্থা বাসারনাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির আরোহীদের খোঁজে হাজারো দ্বীপের মাঝে ওই এলাকায় তারা একটি দল পাঠাচ্ছে।

শ্রীবিজয়া এয়ারের বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন উদ্বেগের মধ্যে। ছবি: রয়টার্স

উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানটি শনাক্ত করে সেখানে জাহাজ পাঠানোর কথা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী।

সেখানে কারও বেঁচে থাকার আশা আছে কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি কর্তৃপক্ষ। 

শ্রীবিজয়া এয়ারের প্রধান নির্বাহী জেফারসন ইরউইন জওউয়েনা এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, ফ্লাইট শুরুর আগে উড়োজাহাজটিতে কোনো সমস্যা ছিল না।

বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি ২৭ বছরের পুরনো একটি বোয়িং ৭৩৭-৫০০। এর আগে ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার এয়ারলাইন লায়ন এয়ারের একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ ১৮৮ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হওয়ার পর সবাই মারা যান।

ফ্লাইট ট্র্যাকার ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩৬ মিনিটে জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের চার মিনিটের মধ্যে ফ্লাইট এসজে ১৮২ আকাশে ১০ হাজার ৯০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থান করছিল। তারপর সেখান থেকে সেটি খাড়াভাবে নামতে শুরু করে এবং ২১ সেকেন্ড পর তথ্য পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়।

 

ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সুকার্ন-হাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে উড়োজাহাজটির পাইলটকে জিজ্ঞেস করেছিল, তার ফ্লাইট প্রত্যাশিত পথ ছেড়ে উত্তরপশ্চিম দিকে কেন যাচ্ছে।   

কেন উড়োজাহাজটি হঠাৎ করে নিচের দিকে নামা শুরু করেছিল, তাৎক্ষণিকভাবে তার কারণ জানা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশ বিমান দুর্ঘটনার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকে আর সেগুলো খুঁজে বের করতে কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখানো হয়েছে।

জুলকিফ্লি নামের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা সিএনএনইন্দোনেশিয়া ডটকমকে বলেছেন, “আমরা পানিতে কিছু তার, কয়েক টুকরা জিন্স ও ধাতুর টুকরা পেয়েছি,”

উড়োজাহাজটির আরোহীদের উদ্বিগ্ন, বিপর্যস্ত স্বজনরা জাকার্তা থেকে প্রায় ৭৪০ কিলোমিটার দূরে পনতিয়ানাকে অপেক্ষা করছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।