বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মারাত্মকভাবে অপুষ্টির শিকার ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত ফায়িদ সামিম ইয়েমেনের রাজধানীর একটি হাসপাতালের বিছানায় কুঁকড়ে শুয়ে আছে, তাকে রোববার এখানে ভর্তি করা হয়েছে।
সানার আল সাবীন হাসপাতালের অপুষ্টি ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক রাজে মোহাম্মদ বলেন, “যখন তাকে আনা হয় তখন তার প্রায় শেষ অবস্থা, কিন্তু খোদাকে ধন্যবাদ যা করার প্রয়োজন ছিল আমরা তা করতে পেরেছি আর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। সে সেরিব্রাল প্যালসি (সিপি) ও মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে।”
ফায়িদের ওজন মাত্র সাত কেজি আর তার ছোট্ট, ক্ষীণ দেহটি হাসপাতালের ভাঁজ করা কম্বলের এক-চতুর্থাংশ দিয়েই ঢেকে দেওয়া যায়।
সানা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তরের আল জাওফ থেকে তাকে নিয়ে এসেছে তার পরিবার। আসার সময় অনেকগুলো চেকপয়েন্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের।
ফায়িদের চিকিৎসা ও ওষুধের খরচ বহনের সামর্থ্য না থাকায় তার পরিবারকে অনুদানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘ এই পরিস্থিতিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কট’ বলে বর্ণনা করছে। এরপরও সরকারিভাবে ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়নি।
২০১৮-র শেষ দিকে জাতিসংঘের আসন্ন দুর্ভিক্ষের হুঁশিয়ারির কারণে দেশটিতে ত্রাণ প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, পঙ্গপাল, বন্যা ও তহবিল অপ্রতুলতার কারণে ২০২০ এ ত্রাণ প্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় খাদ্য সমস্যা উদ্বেগজনক আকার ধারণ করেছে।
ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ২০১৫ সাল থেকে স্থানীয় শিয়া হুতি আন্দোলনের সঙ্গে লড়াই করছে। হুতিরা ইরানের সমর্থন পায় বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়।
ছয় বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে এক লাখের বেশি লোক নিহত হয়েছেন এবং দেশটি দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। রাজধানী সানাসহ অধিকাংশ বড় শহর হুতিদের নিয়ন্ত্রণে আছে।