ইরানের পারমাণবিক অবস্থান জোরদার ও পরিদর্শন বন্ধ করতে আইন পাস

ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে জাতিসংঘ পরিদর্শকদের পরিদর্শন বন্ধ ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়াতে পার্লামেন্টে পাস হওয়া একটি আইন অনুমোদন করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2020, 06:56 AM
Updated : 3 Dec 2020, 07:09 AM

বুধবার গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদন পাওয়া আইনটিতে সরকারকে, দুই মাসের মধ্যে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে জাতিসংঘের পরিদর্শন বন্ধ ও তেহরানের ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া সীমার চেয়ে বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত সপ্তাহে ইরানের শীষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহের হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পার্লামেন্ট মঙ্গলবার আইনটি পাশ করে। ইরান ফাখরিজাদেহের হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।

প্রস্তাবিত আইনগুলো শিয়া ইসলামিক অনুশাসন ও ইরানের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা, তা যাচাই করে দেশটির গার্ডিয়ান কাউন্সিল। তবে নতুন এ আইনের বিষয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনির অবস্থান জানা যায়নি; রাষ্ট্রের যে কোনো বিষয়েই চূড়ান্ত মতামত দেওয়ার ক্ষমতা তার হাতে।

ইরানের আধা-স্বায়ত্তশাসিত ফার্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আজ একটি চিঠিতে পার্লামেন্টের স্পিকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টেকে নতুন আইন কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন।”

এই আইন অনুযায়ী, ইরানের তেল ও আর্থিক খাতের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়টি দেখার জন্য ইউরোপীয় পক্ষগুলোকে দুই মাস সময় দেবে তেহরান।

তেহরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির করা চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর ওয়াশিংটন ২০১৮ সালে এ নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের তেহরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ করার নীতির প্রতিক্রিয়ায় এই চুক্তি মেনে চলা থেকে ধাপে ধাপে সরে আসছিল ইরান। 

ইরানের কট্টরপন্থি আইনপ্রণেতাদের সমর্থনে পাশ হওয়া নতুন আইনটির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসার পথ কঠিন হয়ে গেল বলে মন্তব্য করেছে রয়টার্স।

বাইডেন বলেছিলেন, যদি তেহরান ‘পরমাণু চুক্তি কঠোরভাবে মেনে চলে’ তাহলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তিতে ফিরিয়ে আনবেন এবং ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবেন।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির ইরানি পক্ষের প্রধান স্থপতি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি পার্লামেন্টের এ পদক্ষেপকে ‘কূটনৈতিক উদ্যোগের জন্য ক্ষতিকর’ বলে সমালোচনা করেছেন।

নতুন আইন অনুযায়ী, ইরানের সরকারকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে হবে এবং নাতাঞ্জ ও ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে উন্নত সেন্ট্রিফিউজ বসাতে হবে।