ব্রহ্মপুত্র নদে নতুন বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা চীনের

তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাটির মুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি জলবিদ্যুৎ কোম্পানিকে অনুমতি দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2020, 05:03 AM
Updated : 1 Dec 2020, 05:36 AM

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যমের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দেশটির চতুর্দশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২১-২০২৫) অংশ হিসেবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর মাধ্যমে তিব্বতে ইয়ারলুং জ্যাংবো নামে পরিচিত ব্রহ্মপুত্র নদে চীনের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি নতুন পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে।

এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নদের ভাটির দেশ ভারত ও বাংলাদেশে জলপ্রবাহ বিঘ্নিত হতে পারে বলে ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, তিব্বতের মেডগ কাউন্টির কাছে নদীখাতের একটি অংশে ওই বাঁধ নির্মাণ করা হবে। ওই এলাকার কাছেই ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গত মাসে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত জলবিদ্যুৎ কোম্পানি পাওয়ারচায়না স্বায়ত্তশাসিত তিব্বত অঞ্চলের সরকারের সঙ্গে ‘একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি’ স্বাক্ষর করে।

ভারতীয় পত্রিকা হিন্দু জানিয়েছে, ২০১৫ সালে তিব্বতের জাঙ্গমুতে চীন তাদের প্রথম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করেছিল। এরপর দাগু, জিয়েক্সু ও জাছা এলাকায় আরও তিনটি বাঁধ নির্মাণ করে। সেগুলোর সবই নির্মাণ করা হয়েছে ইয়ারলুং জ্যাংবো (ব্রহ্মপুত্র) নদের উজানে উচ্চ ও মাঝের গতিপথে। 

কিন্তু এই প্রথম নদের নিম্ন গতিপথে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চীন। এই বাঁধকে কেন্দ্র করে চীন তাদের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে।

গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাওয়ারচায়নার চেয়ারম্যান ইয়ান ঝিইয়ং গত সপ্তাহে এক সম্মেলনে এই প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন। তার ভাষায়, ইতিহাসে এই বাঁধের সাথে তুলনা করার মত আর কিছু নেই।

ইয়ারলুং জ্যাংবোর নিম্ন গতিপথের অংশটি ‘চীনের জলবিদ্যুৎ শিল্পের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ’ তৈরি করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ঝিইয়ং। 

নদের উচ্চ ও মাঝের গতিপথে নির্মিত চারটি বাঁধ নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সেগুলো ব্রহ্মপুত্র নদের পানিপ্রবাহে ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে ধারণা ভারতীয় কর্মকর্তাদের।

কিন্তু নিম্ন গতিপথে প্রস্তাবিত বাঁধটি নির্মিত হলে পানিপ্রবাহ বিঘ্নিত হতে পারে এবং তাতে নতুন করে উদ্বেগ ও উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।