এই ছবি পোস্ট করার জন্য চীনের ‘অত্যন্ত লজ্জিত হওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছেন মরিসন।
চীন এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল। চীনের সরকারি মুখপাত্রের টুইটার একাউন্টে পোস্ট করা ছবিটি নিরীহ আফগান হত্যার মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলীয় সেনাদের যুদ্ধাপরাধ করার অভিযোগেরই ইঙ্গিতবাহী।
এ মাসের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স (এডিএফ) তাদের প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে,২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বন্দি, কৃষক ও বেসামরিক আফগান নাগরিকদেরকে হত্যার ঘটনায় ২৫ অস্ট্রেলীয় সেনা বেআইনিভাবে সরাসরি কিংবা পরোক্ষোভাবে অংশ নিয়েছিল।
অস্ট্রেলীয় সেনাদের এই অপকীর্তি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পুলিশী তদন্ত শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া তাদের বিশেষ বাহিনীর অন্তত ১৩ সেনাকে চাকরিচ্যুত করার উদ্যোগও নিয়েছে।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান তার টুইটার একাউন্টে একটি বানোয়াট ছবি পোস্ট করেন। এতে দেখা যায়, এক অস্ট্রেলীয় সেনা একটি আফগান শিশুর গলায় রক্তমাখা ছুরি ধরে আছে। আর শিশুটি একটি ভেড়া ধরে আছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ বাহিনীর সেনারা ১৪ বছরের আফগান শিশুদেরকে হত্যায় ছুরি ব্যবহার করেছে বলে এর আগে ওঠা অভিযোগের দিকেই এ ছবি দিয়ে অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এডিএফ তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে এমন অভিযোগের কোনও প্রমাণ দেয়নি।
ঝাওয়ের টুইটে লেখা হয়,“অস্ট্রেলীয় সেনাদের আফগান বেসামরিক নাগরিক ও বন্দি হত্যার ঘটনা আমাদের হতবাক করেছে। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। দায়ী সেনাদের জবাবদিহি করারও আহ্বান জানাচ্ছি।”
ঝাওয়ের এই পোস্ট মুছে দিতে টুইটারকে অনুরোধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ছবিটি ভুয়া উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন,“এ পোস্ট সত্যিই অবমাননাকর, ভীষণ আক্রমণাত্মক এবং খুবই আপত্তিকর।”
তিনি বলেন,“চীন সরকার এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের চোখে হেয় হয়েছে। ছবিটি ভুয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য ভয়ানক গ্লানিকর।”
একটি গণতান্ত্রিক ও উদার দেশের কাছ থেকে যা আশা করা যায় অস্ট্রেলিয়া সে অনুযায়ীই সেনাদের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সৎ এবং স্বচ্ছভাবে তদন্ত করে দেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন মরিসন।
চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার চলমান উত্তেজনার কথা স্বীকার করে মরিসন দুই দেশের মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সরাসরি আলোচনাও চেয়েছেন। চীনকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তারা (চীন) কী আচরণ করছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো তা প্রত্যক্ষ করছে।