ভারতে বিক্ষোভ আরও জোরদারের অঙ্গীকার কৃষকদের

নতুন তিন কৃষি সংস্কার আইন নিয়ে ভারতের হাজার হাজার কৃষক টানা তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভে করছেন। সরকারের আবেদন উপেক্ষা করে বিক্ষোভ আরও জোরদার করার সংকল্প নিয়েছেন তারা।

>>রয়টার্স
Published : 29 Nov 2020, 04:02 PM
Updated : 29 Nov 2020, 04:02 PM

রাজধানী দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়ে কৃষকরা নগরীর প্রবেশ পথগুলো অবরোধ করে রেখেছেন।

সরকার কৃষকদেরকে  মহাসড়ক অবরোধ বন্ধের আবেদন জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তা মানছেন না বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।

রোববার কৃষকরা দিল্লিতে ঢোকা-বেরোনের পাঁচটি প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ করে রাজধানী ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।

বিক্ষোভরত কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি সংস্কারের নামে নতুন যে তিনটি আইন করা হয়েছে তা ‘কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থি’। যার বিরুদ্ধে গত কয়েকমাস ধরে নানা সময়ে কৃষক বিক্ষোভ হয়েছে।

সরকার থেকে আলোচনার জন্য শনিবার কৃষক নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দেননি।

আন্দোলনরত ‘ভারতীয় কৃষান ইউনিয়’ এর মুখপাত্র রাকেশ টিকাত বলেন, ‘‘আমরা আজ এখানেই অবস্থান করব।”

আরেক কৃষক নেতা বলেন, ‘‘রোববার সন্ধ্যায় কৃষক নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসবেন এবং সরকারের আমন্ত্রণের বিষয়ে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবেন।”

কৃষকদের ৩০ টির বেশি ইউনিয়ন এবারের বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে। 

বিরোধী দলের চরম আপত্তির পরও কৃষিসংস্কার নিয়ে তিনটি বিল ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়ার পর গত সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বিল তিনটি সই করলে সেগুলো আইনে পরিণত হয়।

ওই তিনটি আইনের একটির অধীনে সরকার ন্যায্যমূল্যে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনা বন্ধ করে দিতে পারবে। যার ফলে পাইকারি বাজারে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের।

তাদের ভয়, ওই আইনের ফলে ফসলের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বড় বড় ব্যবসায়ী ও কোম্পানির হাতে চলে যাবে, কৃষকদের হাতে কোনো ক্ষমতাই থাকবে না। তাই তারা ওই আইনগুলো বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছে।

কৃষকদের শান্ত করতে রোববার রেডিওতে দেওয়া নিয়মিত ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘এই সংস্কারের মাধ্যমে কৃষকরা নতুন অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন।”

উত্তরের দুই রাজ্য পাঞ্জব ও হরিয়ানার কৃষকরা এবারের আন্দোলন শুরু করেন। গত শুক্রবার তারা ‘দিল্লি চলো’ শিরোনামে পাঞ্জাব থেকে রাজধানী দিল্লির পথে রওয়ানা হন। মাঝে হরিয়ানায় পুলিশ তাদের আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে। যার ফলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

পরে সরকার তাদের দিল্লিতে সমাবেশ করার অনুমতি দিলেও হরিয়ানা-দিল্লি সীমান্তে পুলিশ প্রহরা বাড়ানো হয়। প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশ থেকেও কৃষকরা ওই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।

এদিকে, শনিবার থেকে অন্ধ্রোপ্রদেশ, তামিল নাড়ু ও কেরালায় কৃষক বিক্ষোভ শুরু হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

কৃষকদের বিক্ষোভের কারণে ভারতে পাইকারি বাজারে তাজা কৃষি পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়াও বিক্ষোভের কারণে মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে।