ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফেরা উচিত হবে না: যুক্তরাষ্ট্রকে নেতানিয়াহু

ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির করা যে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দুই বছর আগে বেরিয়ে এসেছিলেন তাতে ফেরা ওয়াশিংটনের উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2020, 08:53 AM
Updated : 23 Nov 2020, 08:53 AM

রোববার করা তার এ মন্তব্যকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি তেল আবিবের বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া বাইডেন এর আগে তেহরান চুক্তিতে দেওয়া সব শর্ত কঠোরভাবে মেনে চললে ইরান পরমাণু চুক্তিতে ফেরার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।

চুক্তিটি ‘শক্তিশালী ও বিস্তৃত করতে এবং ইরানের অন্যান্য অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আরও কার্যকর চাপ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে’ পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে কাজ করারও ইচ্ছা আছে এ ডেমোক্র্যাটের।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচিতে লাগাম টানার শর্তে তাদের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য দেশ ও জার্মানি।

তিন বছর পর, ২০১৮ সালে ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন। পরমাণু চুক্তিতে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ এবং ইরাক, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন মিলিশিয়া বাহিনীকে তেহরানের সহায়তা দেওয়া ঠেকাতে কিছু না থাকায় রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট এ সিদ্ধান্ত নেন বলে তার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা যুক্তিও দিয়েছিলেন।

“আগের পরমাণু চুক্তিতে ফিরে যাওয়া মোটেও উচিত হবে না। ইরান যেন পরমাণু অস্ত্র বানাতে না পারে, তা নিশ্চিতে আমাদের অবশ্যই আপোসহীন নীতিতে অটল থাকতে হবে,” ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে দেওয়া এক বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে এমনটাই বলেছেন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বাইডেনের নাম না নিলেও তিনি যে পরমাণু চুক্তিতে ফেরা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রশাসনকে তেল আবিবের পক্ষ থেকে বার্তা দিয়েছেন তা স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো।

নেতানিয়াহু ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তির কট্টর বিরোধী। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে দেওয়ার এক বক্তৃতাতেও তিনি চুক্তিটিকে ‘খুবই বাজে চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তার ওই মন্তব্যের কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে ট্রাম্পের পূর্বসূরী বারাক ওবামা প্রশাসনের সম্পর্কেও খানিকটা ফাটল ধরেছিল বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলেও রাশিয়া, চীন ও ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো চুক্তিটি টিকিয়ে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। 

চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার কঠোর সমালোচক ইরান শুরু থেকেই তাদের পরমাণু কর্মসূচি অস্ত্র বানানোর উদ্দেশ্যে নয় বলে দাবি করে আসছে।