গুপ্তধন পেতে ‘সন্তানদের বলি দেওয়ার চেষ্টা’, আসামে ২ ভাই আটক

গুপ্তধন পেতে নিজেদের ৬ সন্তানকে বলি দেওয়ার চেষ্টা করছে সন্দেহে আসামের একটি গ্রামের বাসিন্দারা ২ ভাইকে থানায় নিয়ে আসার পর পুলিশ তাদের দুইজনকে আটক করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2020, 01:10 PM
Updated : 16 Nov 2020, 01:10 PM

আসামের শিবসাগর জেলার দিমোউমুখ গ্রামের এ ঘটনা নিয়ে পুলিশ এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

দুই ভাই এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ‘সন্তান বলির চেষ্টার’ অভিযোগ অস্বীকার করছে। দুই ভাইয়ের ৬ সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।  

গুয়াহাটি থেকে প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার পূর্বে, শিবসাগর জেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে দিমোউমুখ গ্রামের অবস্থান।

গ্রামটির বাসিন্দারা সম্প্রতি জামিউর হুসেন ও শরিফুল হুসেন নামের দুই ভাই নিজেদের ৬ সন্তানকে বলি দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে পুলিশকে তাদের সন্দেহের কথা জানান।

সোনারি এলাকার এক ‘সাধুর’ পরামর্শে জামিউর ও শফিউল এমন পরিকল্পনা হাতে নেয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।

“স্থানীয়রা জানান, শিবসাগর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরের সোনারি এলাকায় সাধু হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তি দুই ভাইকে বলেছে, তারা তাদের নিজেদের বাড়ির একটি আমগাছের নিচে লুকানো স্বর্ণ পাবে যদি তারা নিজেদের সন্তানদের বলি দেয়,” বলেছেন শিবসাগর সদর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা।    

জামিউর ও শফিউল দুই ভাইয়েরই তিনটি করে সন্তান।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই ভাই তাদের ৬ সন্তানকে নির্জনে আটকে রাখার পর গ্রামবাসীদের সন্দেহ বেড়ে যায়। এরপরই তারা জামিউর ও শফিউর, তাদের স্ত্রী এবং সন্তানদের শিবসাগর সদর থানায় ধরে নিয়ে যায়। 

“আনুষ্ঠানিক অভিযোগের অনুপস্থিতি এবং নরবলি সংক্রান্ত যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার সমর্থনে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী না পাওয়ায় পুলিশ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছে। অভিযোগ নিয়ে আমরা নিজেদের মতো তদন্ত করছি,” সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন শিবসাগর পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জয়ন্ত শরতি বোরা।

জামিউল ও শফিউলের পরিবার তাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরাই বলছেন, এক মাস আগে তারা সোনারির ওই সাধুর কাছে গিয়েছিলেন ঠিকই; তবে গুপ্তধন লাভের উদ্দেশ্যে নয়, গিয়েছিলেন সন্তানদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঠেকানোর পরামর্শ নিতে।

“পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন সোনারি থেকে ফেরার পর থেকেই গ্রামবাসীরা তাদেরকে সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করে। পুলিশ ওই সাধুকে ধরার চেষ্টা করছে,” বলেছেন বোরা।

আসামে নরবলি, বিশেষ করে শিশুবলির ঘটনা মাঝে মাঝেই শোনা যায়।

গত বছরও আসামের উদলগিরি জেলায় পরিবারের সদস্যরা বলি দিতে যাচ্ছিল এমন সময় এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ২০১৩ সালে এক ব্যক্তি তার ১৩ বছর বয়সী সন্তানকে নরবলি দেওয়ার কায়দায় হত্যা করেন।