সোমবার সিরিয়ার সরকার ৭৯ বছর বয়সী মোয়ালেমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বহুদর্শী এ কূটনীতিকের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি, তবে কয়েক বছর ধরেই হৃদরোগজনিত নানান সমস্যায় ভুগে তার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে পড়েছিল।
“তিনি তার মর্যাদাপূর্ণ দেশপ্রেমিক অবস্থানের জন্য পরিচিত ছিলেন,” সিরিয়ার সরকারের দেওয়া বিবৃতিতে মোয়ালেম সম্পর্কে এমনটাই বলা হয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় ভোরে তার মৃত্যু হয় এবং পরে তাকে দামেস্কে সমাহিত করা হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
২০০৬ সালে প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মোয়ালেম সিরিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রীও ছিলেন। দীর্ঘ কূটনীতিক জীবনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও সামলেছেন। গত শতকের ৯০ এর দশকে ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার ব্যর্থ শান্তি আলোচনার সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি।
মোয়ালেমের মৃত্যুর পর তার ডেপুটি, আরেক অভিজ্ঞ কূটনীতিক ফয়সাল মেকদাদই সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে দেশটির সরকার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র রয়টার্সকে ধারণা দিয়েছে।
২০১১ সালে সিরিয়ার বিভিন্ন সড়কে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী আসাদ পরিবারের কয়েক দশকের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে সরকারি বাহিনী তা দমনে যে সহিংস দমনপীড়নের আশ্রয় নিয়েছিল মোয়ালেম ছিলেন তার কট্টর সমর্থক; আসাদবিরোধীরা এজন্য তাকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ অভিধাও দিয়েছিল।
আসাদবাহিনীর ওই দমনপীড়নের পর সিরিয়ায় পুরোদমে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
সিরিয়ার এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেসময় যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় অস্থিরতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন; আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের ‘জিহাদি সন্ত্রাসী’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি।
“বিশ্বের কোনো দেশের সরকারই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মেনে নেবে না। এ সন্ত্রাসীদের অনেকেই বিদেশ থেকে এসেছে, জিহাদের নামে দেশের বিভিন্ন সড়ক ও গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে,” ২০১২ সালে সংবাদপত্রে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছিলেন মোয়ালেম।
এর কয়েক বছরের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার দখল নিয়েছিল। পরে ইরান ও রাশিয়ার সহযোগিতায় আসাদবাহিনী সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকা পুনরুদ্ধার করে।
১৯৪১ সালে দামেস্কের একটি সুন্নি পরিবারে জন্ম নেওয়া মোয়ালেম প্রকাশ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়া ও শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানের ক্রমবর্ধমান সামরিক আধিপত্যের পক্ষ নিয়েছিলেন।