ক্যামেরুনে স্কুলে বন্দুকধারীদের হামলায় ৬ শিশু নিহত

ক্যামেরুনের একটি স্কুলে বন্দুকধারীদের নির্বিচার গুলিবর্ষণে অন্তত ছয়টি শিশু নিহত ও আরও প্রায় আট শিশু আহত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2020, 06:47 AM
Updated : 25 Oct 2020, 06:47 AM

দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় কুম্বা শহরে শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে হামলার এ ঘটনা ঘটে বলে কর্মকর্তা ও অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

এই অঞ্চলটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের তৎপরতা আছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ঘটনার সময় স্কুলের কাছাকাছি থাকা একজন অভিভাবকসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরের দিকে বেসামরিক পোশাক পরা হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে করে এসে স্কুলে হামলা চালায়। এ সময় বেশ কয়েকটি শিশু দোতালার জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়।

কুম্বা শহরের উপপ্রধান কর্মকর্তা আলী আনোগৌ রয়টার্সকে বলেন, “ক্লাসে শিশুদের পেয়ে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে তারা।”

গুলির শব্দ শুনে ইসাবেল ডিয়োনে তার ১২ বছরের কন্যার খোঁজে দৌঁড়ে স্কুলের ভিতরে যান। সেখানে ক্লাসের মেঝেতে মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি, তার পেট থেকে রক্তপাত হচ্ছিল।

“ও অসহায়ভাবে পড়েছিল আর চিৎকার করে বলছিল ‘মা আমাকে সাহায্য কর’, আমি তাকে বললাম, ‘তোমার খোদাই শুধু এখন তোমাকে সাহায্য করতে পারে’,” বলেন ডিয়োনে।

গুলিতে আহত বালিকাটিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। 

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক দপ্তর ৮ শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছে এবং তাদের কয়েকজন চাপাতির কোপে হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।

স্থানীয় সাংবাদিকদের ধারণা করা ও পোস্ট করা ভিডিওতে বয়স্ক ব্যক্তিদের শিশুদের কোলে নিয়ে স্কুলটি থেকে বের হয়ে আসতে দেখা গেছে, হাহাকাররত দর্শনার্থীরা তাদের ঘিরে ছিলেন।

রয়টার্সের যাচাই করা একটি ছবিতে একটি শ্রেণিকক্ষের ভেতরের মেঝেতে জমে থাকা রক্ত ও কাছে শিশুদের কিছু স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা আহিম আবানাউ ওবাসে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছয়টি শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। আরও আটটি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই হামলার সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলীয় ইংরেজিভাষী অঞ্চলে অ্যামবোজানিয়া নামের একটি রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টারত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো জড়িত আছে কিনা তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি। এই গোষ্ঠীগুলো ক্যামেরুন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

হামলার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করেছেন আনোগৌ ও আরেকজন কর্মকর্তা, কিন্তু কোনো প্রমাণ দাখিল করেননি।

এক টুইটার পোস্টে এ হামলার ঘটনাকে ‘অমানবিক’ বলে বর্ণনা করেছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অন্যতম নেতা আয়ুক তাবে। এই নৃশংসতার জন্য দায়ীদের অবশ্যই ‘শাস্তি পেতে’ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।