কাবুলে শিক্ষা কেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২৪

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি শিক্ষা কেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কিশোর শিক্ষার্থীসহ ২৪ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2020, 04:56 PM
Updated : 25 Oct 2020, 07:51 AM

শনিবার স্থানীয় সময় বিকালে একটি বেসরকারি উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্রের সামনে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয় বলে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, শিয়া প্রধান দাস্ত ই বার্চি এলাকার কাওসার ই দানিশ শিক্ষা কেন্দ্রে সচরাচর কয়েকশত শিক্ষার্থী অবস্থান করে।

আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারিখ আরিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা রক্ষীরা একজন হামলাকারীকে শনাক্ত করার পর সে কাওসার ই দানিশের সামনের রাস্তায় বিস্ফোরণ ঘটায়।

“একজন আত্মঘাতী বোমারু শিক্ষা কেন্দ্রটিতে প্রবেশ করতে চাইছিল,” বলেছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা আলী রেজা জানিয়েছেন, হতাহতদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী এবং তারা সবাই প্রতিষ্ঠানটির ভিতরে ঢোকার অপেক্ষায় ছিলেন।

“কেন্দ্রটি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখনই বড় ধরনের বিস্ফোরণের ধাক্কায় ছিটকে যাই আমি,” বলেন তিনি।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই ছাত্র এবং তাদের বয়স ১৫ থেক ২৬ বছরের মধ্যে।

পরিবারের সদস্যরা নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে জড়ো হয়ে মেঝেতে সারি দিয়ে রাখা নিহতদের মধ্যে নিখোঁজ প্রিয়জনদের খোঁজ করছিল, অন্যদিকে আহতদের স্ট্রেচারে করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক।  

এক টুইটার পোস্টে এ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তালেবানের একজন মুখপাত্র। একটি শান্তি চুক্তির লক্ষে কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আফগানিস্তানের সরকারি প্রতিনিধিদের আলোচনা চলছে। এমন স্পর্শকাতর সময়েই এ হামলা চালানো হয়েছে।

টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোনো প্রমাণ দাখিল ছাড়াই জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

কাওসার ই দানিশ কেন্দ্রের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিকার পথ দেখানো এই প্রতিষ্ঠানে চালানো হামলায় তিনি ও তার সহকর্মীরা মর্মাহত হয়েছেন।

“গরিব পরিবারগুলোর এই ছাত্ররা অত্যন্ত উজ্জীবিত ছিল, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় ছিল তারা,” বলেন তিনি।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের বেশ কিছু প্রদেশে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে, তার মধ্যেই রাজধানীতে এ হামলাটি চালানো হল।  

আফগানিস্তানে সরকার ও নেটো এ হামলার নিন্দা করেছে।

কাবুলের উত্তরাংশের শিয়া প্রধান এ এলাকাটিতে এর আগেও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো হামলা চালিয়েছিল।

মে মাসে কাবুলের এই এলাকার একটি মাতৃসদনে বন্দুকধারীদের হামলায় মা ও শিশুসহ ২৪ জন নিহত হয়েছিল।

এর আগে ২০১৮ সালে এই দাস্ত ই বার্চি এলাকার আরেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরেক হামলার ঘটনায় ৪৮ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছিল। আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল।